জীবনের জয়গানে সামিল ক্যান্সার জয়ী অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা ।

জীবন, এক কঠিন সংগ্রাম। যাঁরা থেকে যেতে পারেন, তাঁরাই মুকুট পড়েন এই সংগ্রাম জয়ের শেষে। মাঝপথেও হাল ছাড়তে হয় বহুজনকে। এই জীবন, বড় দামী! যাতনারও, আবার সুখেরও। তাইতো প্রায় প্রত্যেক মানুষেরই বেঁচে থাকার আর্তনাদ হয় এই জীবনকে কেন্দ্র করেই! ‘ জীবন রে, তুই ছাড়িয়া যাস না মোরে..’ কারণ জীবন একবার ছেড়ে গেলে এ স্বপ্ন বিলাসের যাপনও সাঙ্গ হবে। আর সেই জীবনকে প্রাণপনে তাই উপভোগ করে চলেছেন, অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। কারণ তিনি স্বয়ং জীবন মৃত্যুর মাঝে, অবস্থান করেছেন। তিনি বুঝেছেন, মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকাই অধিক শ্রেয়। হয়তো তাঁর মতো করে সকলে জীবনের সঙ্গা উপভোগ করতে পারেন না। এ কথা সত্যি, জীবন মুখ না ফেরালে, কেউ জীবনের মর্ম বোঝেন না। যাঁরা ভাগ্যবান, তাঁরা বারবার জীবনে ফিরে আসেন।
ঐন্দ্রিলা শর্মা, টেলি জগতের পরিচিত মুখ। খুব ছোট বয়সে স্কুলের গণ্ডি না পেরোতেই তিনি প্রথম ধাক্কাটা খান জীবনের থেকে। আক্রান্ত হন ক্যান্সারে। চলে বছরব্যাপী সংগ্রাম। কয়েক বছর পর ঐন্দ্রিলা ক্যান্সারমুক্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু, বিপদ তখনও নির্মূল হয়নি। ফের থাবা বসায় বছর দুয়েক আগে ক্যান্সার। তখন ঐন্দ্রিলা ‘জিয়নকাঠি’ বলে একটি ধারাবাহিকের কেন্দ্র চরিত্রে। সেই সময়েই ঐন্দ্রিলা পাড়ি দেন দিল্লিতে। একের পর এক যন্ত্রণাময় দিন তাঁকে শারীরিক ভাবে দুর্বল করে তুলতে থাকে। মা এবং বাবার সঙ্গে, যে মানুষটি শত ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও তাঁকে আগলে রেখেছিলেন, তিনি হলেন ঐন্দ্রিলার প্রেমিক, সব্যসাচী চৌধুরী। তিনিও টলি জগতের পরিচিত মুখ। হাতে শত কাজের চাপ থাকলেও, শয্যাশায়ী প্রেয়সীর কাছে ছুটতে দিল্লি পৌঁছে যান তিনি। ঐন্দ্রিলার শারীরিক যন্ত্রণা, মানসিক শান্তিতে ক্ষীণ হয়ে ওঠে।
একটানা দুর্বিষহ কেমোথেরাপির পর ২০২১ এর ২৯ ডিসেম্বর ঐন্দ্রিলাকে ক্যান্সারমুক্ত ঘোষণা করা হয়। শরীর থেকে ক্যান্সার নির্মূল হলেও, থেকে যায় তার রেশ। ঐন্দ্রিলার লাংসের অনেকটা সার্জারিতে বাদ দিতে হয়। ঐন্দ্রিলা থামেননি। নাচ, আনন্দ, হইহুল্লোড় নিয়ে এগিয়ে চলেছেন পরিচিত ছন্দে। সঙ্গে আছেন তাঁর চির ভরসার কেন্দ্র পরিবার, এবং প্রেমিক সব্যসাচী। খুব তাড়াতাড়ি শুটিং ফ্লোরে ফেরবার কথা জানিয়েছেন তিনি। আপাতত বন্ধু বান্ধব, পরিবার, ঘোরা বেড়ানোর সঙ্গে চুটিয়ে জীবনের আমেজ নিয়ে চলেছেন এই ‘বিজয়িনী’।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *