মাত্র ২০০০ টাকা দিয়ে টিফিনের ব্যাবসা শুরু করেছিলেন এক মহিলা, আজ বছরে তাঁর আয় ১ কোটি টাকা।

মহিলারা (Women) আজকের দিনে পিছিয়ে নেই। পুরুষদের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে চলছেন তারা। আজ এমনই এক মহিলা ব্যবসায়ীর (Businessman) কথা বলব, যিনি অনেক পরিশ্রম করে তার ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। আজ তিনি একজন মহিলা সফল ব্যবসায়ী। তিনি হলেন ললিতা পাতিল। আসুন তাঁর কথা বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।

মহারাষ্ট্রের থানের বাসিন্দা হলেন লালিতা পাতিল (Lalita Patil)। তবে তাঁর খাবার ব্যাবসায়ী(Food Business) হয়ে উঠাটা খুব সহজ ছিল না। অনেক পরিশ্রম ও নিজের উপর ভরসা রেখে আজ তিনি সফল। ললিতা পাতিলের মতে, মহিলারা যতক্ষন না বাড়ির বাইরে এসে কাজ করছেন, ততক্ষন তাদের গৃহিণী হিসাবেই দেখা হয়। যতক্ষন না বাড়ির বাইরে এসে কাজ করেন, ততক্ষন মহিলারা পরিশ্রমের স্বীকৃতি বা প্রশংসা পান না। ললিতা পাতিলের বয়স এখন ৩৭। এই বয়সে এসে নিজের আত্মবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর এই আত্মবিশ্বাস আর মানসিক বল অনেককে অনুপ্রেরণা যোগায়।

পদার্থবিদ্যায়(Physics) স্নাতক(Graduation) ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। সব সময় তিনি আর্থিক দিক থেকে স্বাধীন হতে চেয়েছিলেন। প্রথম দিকে তিনি বাচ্চাদের টিউশন পড়াতেন। এরপর একটি ফার্মেসি কোম্পানির ওষুধও বিক্রির কাজও করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই সব করে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি অনুভব করেছিলেন যে, তিনি এই কাজে সন্তুষ্ট নন। কারণ ছোট থেকেই তিনি স্বাধীন ভাবে ব্যাবসা(Business) করতে চেয়েছিলেন। এরপর তিনি এই সব কাজ ছেড়ে ব্যাবসা করার পরিকল্পনা নেন।

ললিতা পাতিল(Lalita Patil) ২০১৬ সালে ব্যাবসা করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেন। প্রথম দিকে মাত্র ২৫০০ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি ব্যবসাটি শুরু করেন। যেখানে ২০০০ টাকা দিয়ে কিছু টিফিন বক্স(Tiffin Box) কেনেন এবং অবশিষ্ট ৫০০ টাকা খরচ করেন প্যামফলেট(Pamfplate) বিতরণ করে ব্যবসাটি প্রচারের জন্য। তিনি প্রথম দিকে বাড়ি থেকেই শুরু করেছিলেন টিফিনের ব্যবসা। বাবসাটির করার জন্য তিনি খাদ্য ব্যবসার লাইসেন্স(Food Liecence) তৈরি করেছিলেন। ব্যাবসাটির নাম দিয়েছিলেন ‘ঘরাচি অথভান'(Gharachi Aathvan), বাংলাতে যার অর্থ ‘বাড়ির স্মৃতি’।

ব্যবসাটি শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ ভালোই চলছিল, তবে তখনো লোকেরা তাঁকে গৃহিণী হিসেবেই দেখতেন। কিন্তু ললিতা পাতিল চাইতেন সমাজে তাঁর গৃহিনী হিসেবে নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি হোক। তিনি মিডিয়াকে জানিয়েছেন, “মানুষ আমাকে উদ্যোক্তা মনে করে না, কারণ আমি বাড়ি থেকে ব্যবসা চালাই। এটা আমাকেও হতাশ করেছে। আমি সমাজের অন্যান্য কর্মজীবী ​​নারীদের মতো একই সম্মান চেয়েছিলাম।” এরপর তিনি ব্যবসাটি বাড়ি থেকে বাইরে নিয়ে যান । বর্তমানে তার ব্যবসারীর সাথে ১০ জন কর্মী নিযুক্ত রয়েছে।

তিনি ব্যবসাটি চালানোর জন্য মূলত ব্যবসায়িক পেশাজীবী(Businessman) এবং ছাত্রদের(Student) লক্ষ্য করছেন, যারা বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকেন এবং বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে পারেন না। তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি ব্যবসাটি থেকে বছরে ১ কোটি টাকার কাছাকাছি উপার্জন করেন। ব্যবসাটি থেকে মাসে কমপক্ষে ৬-৭ লক্ষ টাকা আয় করেন। তাঁর স্বামীও তাঁকে নানা ভাবে বাবসাটিতে সহযোগিতা করে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যবসাটি বৃদ্ধি পায়।মেনুতে থাকে নিরামিষ(Veg) এবং আমিষ(Non-Veg) উভয় খাবারই। একটি টিফিন বক্সে থাকে রুটি, সবজি, মসুর ডাল সাথে মিষ্টি। শুধু তাই নয় ডাল খিচুড়ি কেনার সুবিধাও রয়েছে, যার দাম শুরু হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা। এই ব্যবসাটি ললিতাকে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে অনুপ্রাণিত করেছে, তারসাথে তাঁর আত্মবিশ্বাসকেও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Scroll to Top