বুধবার রাত সাড়ে আটটা। দশমীর রাত। মা’য়ের কৈলাশে ফেরার সময়। পুরো পশ্চিমবঙ্গে তখন মা’কে বিদায় জানানোর জন্য সাজো সাজো রব। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ‘মালবাজার’ এলাকার ‘মাল’ নদীতে মা’দুর্গার বিসর্জন চলাকালীন বহু মানুষের ভিড় জমেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রায় ১০টির ও বেশি ট্রাকে যাত্রীবোঝাই হয়ে এসেছিলেন প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে। প্রতিমা নিরঞ্জন চলাকালীন হঠাৎই ধেয়ে আসে হড়পা বান (Harpa Flood)! প্রথমে কেউই তেমন লক্ষ করেননি সেদিকে। এর জেরে নদীতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই স্রোতের টানে ভেসে যান। এমনকি ট্রাকগুলোও ভেসে যায়। ‘মাল’ নদীর মধ্যিখানে একটি চর (Fodder) রয়েছে। তাতে চড়ে উঠে অনেকে প্রাণে বেঁচে যান কিন্তু অনেকেই তলিয়ে যান স্রোতের টানে! বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এখনো অবধি সম্ভবত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে যার মধ্যে শিশুও ছিল। অনেকে গুরুতর জখম (Injured), হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অনেকের এখনো খোঁজ মেলেনি (Missing)।
এই মর্মান্তিক (Shocking) ঘটনায় সারা রাজ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দেবীর বিসর্জনে যেতে গিয়ে যে এভাবে প্রাণ বিসর্জন দিতে হবে, সেটা কেইই বা ভেবেছিলো! এলাকাবাসীরা সকলে প্রশাসনকেই দায়ী করছেন। এদিনের এই দুর্ঘটনার পর তাঁর ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁরা বলেছেন যে, “প্রশাসনিক গাফিলতিতে (Carelessness) নিষ্পাপ (Innocent) কতকগুলি প্রাণ এভাবে চলে গেল। সরকার কার্নিভাল (Karnival) নিয়ে ব্যস্ত! এমন পাহাড়ি এলাকায় খরস্রোতা নদীতে বিসর্জনের অনুমতি দেয় কিকরে প্রশাসন! নদীতে আবর্জনার স্তূপ জমে আছে, তর্পণ করা যায়না ঠিকমতো। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।”
অপরদিকে, হড়পা বানের (Harpa Flood) সময় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একের পর এক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন মহম্মদ মানিক (Mohammad Manik) ও তরিফুল ইসলাম (Toriful Islam)। তাঁরাও অল্পবিস্তর আঘাত পেয়েছেন।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা ও আহতদের পঞ্চাশ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন।
আশা রাখি, প্রশাসন খুব শীঘ্রই সকলকে উদ্ধার করতে সফল হবেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এখনো চলছে উদ্ধারকাজ। স্বাভাবিকভাবেই এমন একটা মর্মান্তিক (Shocking) ঘটনার পরে প্রশাসনের ভূমিকা বড় প্রশ্নের মুখে! এই দুর্ঘটনায় মৃত, আহত এবং নিখোঁজ সদস্যদের পরিবারের প্রতি আমরা সমব্যথী! তাড়াতাড়ি সব ঠিক হয়ে যাক এটাই প্রার্থনা!