ধারাবাহিকে তিনি ছিলেন সকলের রক্ষাকর্ত্রী। স্টার জলসার বিখ্যাত ধারাবাহিক, ‘মহাপিঠ তারাপীঠ’ এ তারা মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী নবনীতা দাস। ধারাবাহিকে বামদেব থেকে শুরু করে যেকোনও মানুষের বিপদে তিনি রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বাস্তব যে কঠিন! বাস্তব বুঝিয়ে দেয়, কল্পনার জগৎ আর এই জগতের মেলবন্ধন কক্ষণো সাধিত হয় না। সমান্তরালে চলে এই দুই পথের পথিকেরা। তাই তো বাস্তবে বিপদে পড়েও, কারুর থেকে কোনও রকম সাহায্য পেলেন না নবনীতা। উপরন্তু তাঁকে হতে হল হেনস্তার শিকার।
ঠিক কি ঘটেছিল নবনীতার সঙ্গে? গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ নবনীতা, নিমতা দিয়ে ফিরছিলেন ডাক্তার দেখিয়ে। সদ্য হয়েছিল তাঁর রক্ত পরীক্ষা। শরীর ছিল দুর্বল। রাস্তায় তাঁদের গাড়ির সঙ্গে আচমকা সংঘর্ষ হয় এক দল ব্যক্তির। বলা বাহুল্য, কিছুজন ছিলেন মদ্যপ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় দু দলের মধ্যে বচসা। কথা কাটাকাটি, গায়ে হাত তোলা দেখে নবনীতা প্রতিবাদ করতে এলে, ধেয়ে আসে তাঁর দিকে খুনের হুমকি। অসহায় নবনীতা নিকটস্থ নিমতা থানার দ্বারস্থ হলেও, মেলেনি কোনওরকম সাহায্য।
নবনীতা মদ্যপ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফ.আই.আর করাতে চাইলেও, কেউ তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করেননি। ফলে তিনি দ্বারস্থ হন সামাজিক মাধ্যমের। স্বামী জিতু কামালের তৎপরতায়, সামাজিক মাধ্যমে নবনীতা ঘটনার বিবরণী জানান। ভিডিওতে দেখা যায় অভিনেত্রীকে ঘিরে ধরেছে নিরাপত্তাহীনতা। বারবার তিনি অসহায়ের মত জিজ্ঞেস করে যাচ্ছেন, দিনদুপুরে খোলা রাস্তায় এমন ঘটনা ঘটলে, এরপর তিনি বাড়ির বাইরে পা রাখবেন কি করে? ক্ষুব্ধ এবং আতঙ্কিত অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও নেননি কোনও পদক্ষেপ। বরং তাঁরাও নবনীতাকে মানসিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছেন।
নবনীতার ভিডিও ভাইরাল হতেই নিমতা থানায় পৌঁছন সাংবাদিকরা। তাঁরা নবনীতার পাশে দাঁড়ালেও, একজন পুলিশ অফিসার তাঁদের মিথ্যে বয়ান দিয়ে বলেন, নবনীতার থেকে এফ.আই.আর তাঁরা আগেই করে নিয়েছেন। এই মন্তব্য শুনে ফের সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভে ভেঙে পড়েন অভিনেত্রী। পুলিশ যে কোনওরকম সহায়তা তাঁদের করেননি, এ কথা বারবার জানান তিনি।
নবনীতা জানিয়েছেন, সেলিব্রিটি বা তারকা হিসেবে নয়, বরং একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে পুলিশের সাহায্য প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাহায্য তো পাননি, বরং পুলিশের দ্বারাও তাঁর ‘উচিত শিক্ষা’ ই লাভ হয়েছে! তিনি জানিয়েছেন, এরপর বিপদে পড়লেও, তিনি আর কক্ষণো প্রতিবাদ করবেন না, কারণ তাতে অপরাধীরাই আস্কারা পেয়ে যায়, এবং হেনস্তার শিকার হতে হয় আক্রান্তকে।