জাগতিক মোহ-মাৎসর্য অতিক্রম করে ফেলেছেন তিনি! মনুষ্যেতর হয়ে উঠেছেন অরিজিৎ সিং

হিন্দু ধর্ম মতে, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য হল মানবমনের ছয়টি শত্রু। একসঙ্গে বলা হয় যাকে ষড়রিপু। এই ছয়টি অরি কে জয় করলেই, অরিজিৎ হয়ে ওঠা যায়! নামের সঙ্গে, কর্মেও বারংবার প্রমাণ দিচ্ছেন জিয়াগঞ্জের হীরের টুকরো ছেলেটা। অরিজিৎ সিং, যিনি আর গান দিয়ে নয়, বরং মানবতার গুণে দিন দিন শ্রদ্ধা জাগিয়ে তুলছেন আপামর মানুষের মনে। আবারও তিনি শিরোনামে। এবার আইপিএলকে কেন্দ্র করে চর্চামুখী অরিজিৎ সিং। কী করলেন তিনি? জানলে কিন্তু আবার একবার নতুন করে মানুষটার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যাবে আপনার। যদিও তাঁর শ্রোতাদের কাছে তো এ বুকে বারো মাসই “ভালোবাসার মরশুম”।

Arijit Singh

সম্প্রতি আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ভরে উঠেছিল অরিজিৎ-ম্যাজিকে। এই প্রথম এমন কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গানে ভুবন ভরিয়ে তুলতে উপস্থিত হয়েছিলেন জিয়াগঞ্জের এই গান-পাখি। তাই শুরুতেই হাজার হাজার জনতার কাছে বিনয়ী অরিজিৎ জানান, কোথাও তাঁর ভুল ত্রুটি হলে যেন তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। গানের আগেই অরিজিতের এই সূক্ষ্ম মানবিক বোধেই অনুগামীদের মুগ্ধতা প্রকাশ পায়। সবচেয়ে বড় যে কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন অরিজিৎ, সেটি হল, বিনা পারিশ্রমিকে আইপিএলের মঞ্চে তিনি গান পরিবেশনা করেছেন। আর সেখানেই আবার তিনি উঠে এসেছেন মনুষ্যতর হয়ে।

Arijit Singh

মূলত এক দুঘন্টার অনুষ্ঠানে এক থেকে দেড় কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন অরিজিৎ। বলা বাহুল্য, বেশিরভাগটাই তিনি নিজের কাছে না রেখে, সমাজের অসহায় মানুষগুলির জন্য প্রদান করেন। কোটি কোটি টাকার আইপিএলের মঞ্চে, স্বভাবতই অনেক বেশি বেতন পাওয়ার কথা ছিল অরিজিতের। কিন্তু কেন নিলেন না তিনি? সেখানেই তো তিনি অরিজিৎ। আসলে তাঁর ভাগের পারিশ্রমিক তিনি প্রদান করেছেন তাতওয়ামাসি ফাউন্ডেশনে। যেই ফাউন্ডেশন বিগত এক বছর ধরে গ্রাম্য শিশুদের পড়াশুনা, খেলাধুলা, এবং খাওয়া দাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। শুধু তাই নয়, অসহায় বৃদ্ধদের পাশেও দাঁড়িয়েছে 3ই প্রতিষ্ঠান। আর জানেন কি, কারা এই প্রতিষ্ঠানের কান্ডারী? স্বয়ং অরিজিৎ সিং এবং তাঁর সহধর্মিণী কোয়েল সিং।

Arijit Singh

যে যুগে অসহিষ্ণুতাই হয়ে ওঠে আমাদের নিত্য যাপন, যেখানে পথের তথাকথিত ‘পরিত্যক্ত’ কোনও শিশুকে, দু টাকার চকলেট দিয়ে আমরা সেই খরচের টাকার হিসেব কষতে থাকি, সেখানে অরিজিতের মত মানুষ, সত্যিই মানুষ থাকেন না। আক্ষরিক অর্থেই মানবতর হয়ে ওঠেন। কুর্নিশ জানাই অরিজিতকে, কুর্নিশ জানাই তাঁর পরিবারকে। ভালো থাকুন অরিজিৎ, আপনাকেই সাজে, “রাজা সবারে দেন মান, সে মান আপনি ফিরে পান…”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *