আইস্ক্রিম, নাম শুনলেই মনটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে। কিন্তু কিছু মানুষের কপালে ভাঁজও পড়ে। অনেকেরই ধারণা, আইস্ক্রিম খেলে স্থূলতা বৃদ্ধি পায়। এবং হতে পারে আরও নানাবিধ শারীরিক সমস্যা। কিন্তু জানেন কি, নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ আইস্ক্রিম গ্রহণ করলে, কমবে একাধিক রোগের ঝুঁকি? দীর্ঘদিন গবেষণার পর এমন তথ্যই উদঘাটন করেছেন বিজ্ঞানীরা।
একজন আমেরিকান স্বাস্থ্যবিদ উদঘাটন করেছেন, আইস্ক্রিমের গুণাগুণ নিয়ে রহস্য উন্মোচনের যাত্রা নতুন নয়। কয়েক দশক ধরে চলে আসছে এই অনুশীলন। আটলান্টিক ম্যাগাজিনের জন্য একটি নিবন্ধে, ডেভিড মেরিট (David Merritt) বলেছিলেন যে, তিনি গত গ্রীষ্ম থেকে আইস্ক্রিমের উপকারিতা সম্পর্কিত তথ্যগুলি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। তাঁকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন হাভার্ডের এক ছাত্রের গবেষণা। যেখানে উল্লেখ ছিল, ৬৪ গ্রাম আইস্ক্রিম ডায়াবেটিক রোগীর জন্য হৃদরোগের ঝুঁকির সম্ভাবনা হ্রাসের কারণ হতে পারে।
অন্যান্য গবেষণা দ্বারাও আইস্ক্রিমের উপকারিতা সম্পর্কে নানা তথ্য গৃহীত হয়েছে। যেমন, আইস্ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ থেকে, যার কারণে শরীরে ভিটামিন A, D, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং রিবোফ্লেভিনের চাহিদা পূরণ হয়। আবার ডার্ক চকোলেট আইস্ক্রিম হলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লেভোনয়েডের ঘাটতি পূরণ হয় যা ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রাকে হ্রাস করে হৃদযন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত চালনা করতে সাহায্য করে।
ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে, স্ত্রীদের ডায়েটে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আইস্ক্রিম প্রদান করা হয়। এমনকী সন্তান ধারণে জটিলতা দেখা গেলে, আইস্ক্রিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক চিকিৎসক। এক সমীক্ষা অনুযায়ী, আইস্ক্রিমের মত হাই-ফ্যাট ডেয়ারী সমৃদ্ধ খাবার খেলে সন্তান ধারণের ক্ষমতা বাড়ে।
আইস্ক্রিম খেলে সেরোটোনিন হরমোন তৈরি হয় মানবদেহে, যা শরীর এবং মনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া সকালে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ আইস্ক্রিম খেলে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বাড়ে, যায় ফলে সকল কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হতে পারে। বলা বাহুল্য, ক্যালরি মেপে আইস্ক্রিম খেলে স্থূলতা তো বৃদ্ধি হবেই না, উল্টে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
সতর্কতা অবলম্বন: স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমন কাজেও আইস্ক্রিমের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে অতিরিক্ত আইস্ক্রিম গ্রহণ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মত, সঠিক মাপে, নির্দিষ্ট সময়ে এটি গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে।