পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে চোখ হলো শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ। অথচ চোখ হলো খুব জরুরী অঙ্গ।চোখের উপরেই যাবতীয় চাপ। অফিসে দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, ঘন ঘন জুম মিটিং, সারাক্ষণ মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি— যত অত্যাচার সবই চোখের উপর।
শরীর সুস্থ রাখতে চিকিৎসকরা যেমন শরীরচর্চা করতে বলেন, তেমন চোখের আলাদা করে যত্ন নেওয়াও প্রয়োজন। চোখ ভাল রাখতে কাজের ফাঁকেই চোখের বিশ্রামও জরুরি। মাঝেমাঝেই চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপ্টা দেওয়া প্রয়োজন। তবে দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে, চোখ ব্যথা, অনবরত জল পড়ার মতো কিছু সমস্যা মেটাতে ভরসা রাখতে পারেন সহজ কয়েকটি যোগাসনের উপর।
১) হাতের তালুর ব্যবহার:
দু’হাতের তালু খানিক ক্ষণ ঘষে গরম করে নিন। ঘর্ষণের ফলে হাতের তালুতে যে তাপ উৎপন্ন হবে, চোখ বন্ধ করে হাতদু’টি চোখের উপরে রাখুন। চাপ দেবেন না। হালকা হাতে তাপ দিন চোখে। ১০ থেকে ১৫ বার একটানা করুন। কাজের ফাঁকেও করে ফেলতে পারেন এই সহজ ব্যায়াম।
২) চোখ ঘোরানো:
গোল করে চোখের মণি ঘোরানোও চোখ ভাল রাখার জন্য বেশ কার্যকর একটি ব্যায়াম। ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ১০ বার করে মণি ঘোরান। তার পর চোখ বন্ধ রাখুন মিনিট খানেক। দিনে দু’বার করে এই ব্যায়ামটি করার চেষ্টা করুন। চোখের পেশিশক্তি বাড়াতে এই আসন ভীষণ উপযোগী।
৩) ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলা:
প্রতি ৩-৪ সেকেন্ড পরপর চোখের পাতা ফেলা, চোখের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। বিশেষ করে এক ভাবে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাঝেমাঝে চোখের এই আসনটি করে নেওয়া ভাল। টানা এক মিনিট ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলে দেখুন চোখের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
৪) এ দিক-ও দিক তাকানো:
এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে প্রথমে সোজাসুজি তাকান। এ বার বাঁ পাশে ও ডান পাশে সমান দূরত্বের কোনও বস্তুর দিকে বারে বারে তাকান। মিনিট দুয়েক করুন। কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার করুন। চোখের পেশি সঞ্চালন ভাল রাখতে এই ব্যায়াম ভীষণ উপকারী।
৫) বালাসন:
হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এ বার শরীরটা বেঁকান। শরীরটা এমন ভাবে বেঁকান যাতে বুক যেন গিয়ে উরুতে ঠেকে। মাথা মেঝেতে রাখুন। আর হাত দু’টি সামনের দিকে প্রসারিত করে রাখুন। মানসিক অবসাদ ও হজমের গোলমাল হলেও চুল পড়ে যায়। বালাসন করলে এই দুই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই আসন স্নায়ুতন্ত্রের জন্যও খুব উপকারী। এই আসন করার সময়ে চোখ বন্ধ রাখুন। চোখেরও বিশ্রামের প্রয়োজন।