ঘন কালো চুলের স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। কিন্তু বর্তমান সময়ে দূষণ, যত্নহীনতার কারণে চুল ঝরে যাওয়া থেকে শুরু করে চুলের অকালে সাদা হয়ে যাওয়া অবধি দেখা যায় বহু সমস্যা। তাহলে কি করবেন? সারাদিনে বাড়তি কিছু নাহলেও খাবার জন্য খান। এবার সেই খাবারেই বদল আনুন। হ্যাঁ আপনার নিয়মিত ডায়েট ঠিক করুন। কি কি করবেন? দেখুন।
ডায়েটে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ান:
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য এক অমূল্য পদার্থ। শরীর শুধু না, চুল গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই প্রোটিন। চুলের গঠন, বৃদ্ধি এবং শক্তির জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। ভালো প্রোটিন আপনি বিভিন্ন খাদ্য যেমন মাখানা, চিনাবাদাম, সয়াবিন, মসুর ডাল, ছোলা, দই, ডিম, তোফু, মাংস, ধনে-পুদিনা এবং পনিরের মধ্যে পেয়ে যাবেন।
ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, বিশেষ করে Docosahexaenoic Acid (DHA) এবং
Eicosapentaenoic acid (EPA) চুলের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি চুল পড়া কমায় এবং তাদের শক্তিশালী বানায়। ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড তিল, ফ্ল্যাক্সসিড, মাখন, মাছ এবং আখরোটে পাওয়া যায়, যা চুলকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দেয়।
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স খান:
B-complex হল B ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি উৎস যা স্বাস্থ্যকর চুল পেতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি ১২, বায়োটিন (ভিটামিন বি৭), ফলিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৯) ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। স্প্রাউট, ডাল, আলু, গাজর এবং ব্রকলি খাওয়া বি-কমপ্লেক্স প্রদান করে।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খান:
ভিটামিন C কত উপকারী তা নিশ্চয় আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমলা, পেয়ারা, কমলা, লেবু ইত্যাদিতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়, যা চুলের শক্তি বাড়ায় এবং চুল পড়া রোধ করে। এছাড়াও, ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি চুলের রাসায়নিক গঠন, কোলাজেন উৎপাদন এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে ।
আয়রন দিয়ে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ করুন:
আয়রন শক্তিশালী চুলের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। কারণ এটি হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকলে তা চুলের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে এবং চুল পড়া বাড়ায়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রার জন্য মাংস, মাছ, সয়াবিন, মসুর ডাল, পালং শাক এবং কিশমিশ খান ।
ভিটামিন ই গ্রহণ করুন:
ভিটামিন ই শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য প্রয়োজনীয় কারণ এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি ব়্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চুলকে রক্ষা করে। এটি চুল ঘন করতে এবং এর চকচকে বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। কাজু, বাদাম, চিনাবাদাম, সয়াবিন এবং তিলের তেলে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খান:
জলই হলো জীবন। সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। মজবুত, সুন্দর চুল পেতে হলেও বেশি করে জল পান করা জরুরি। নিয়মিত ৩-৪ লিটার জল খান। সুস্থ, মজবুত এবং ঘন চুলের অধিকারী হবে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও জলের গুরুত্ব অপরিহার্য।