অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী, এই যুগের এক অন্যতম ‘সেনসেশন’ এর নাম। ২০০৯ সালে, পা রাখেন টেলি দুনিয়ায়। স্টার জলসার বিখ্যাত ধারাবাহিক, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ তে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। সেখানে তাঁর অভিনীত চরিত্র ‘ললিতা’ শুধু পর্দার ভেতরেই নয়, পর্দার বাইরেও হয়ে উঠেছিল বাঙালি দর্শকের নয়নের মণি।
অভিনয় চলাকালীন পড়াশুনা করে, উচ্চমাধ্যমিকে দুর্ধর্ষ ফলাফল করেন টলি দুনিয়ার ‘পলিন’ (ঋতাভরীর ডাক নাম)। সেই সময়ে তাঁর এই ফলাফল শুনে, রীতিমত তিনি অনুগামীদের কাছে আরও বেশি করে চর্চামুখী হন। কিছু বছর বিরতি নিলেও ফের শুরু করেন স্টার জলসার অন্য একটি ধারাবাহিকে কাজ। কিন্তু সেই ধারাবাহিক মাঝপথেই ছেড়ে দেন তিনি। তারপর তাঁর হাতে খড়ি হয় বড় পর্দায়।
বছর কয়েক আগে, সমাজের এক বিশিষ্ট নারী পুরোহিতের জীবন অবলম্বনে তৈরি ছবিতে, ঋতাভরী মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। যুগ যুগ ধরে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীকে কোণঠাসা করে আসছে। ঠাকুরঘরে বাড়ির গৃহিণী পুজো করলেও, বড় পুজো বা বিয়ে দেওয়ার ‘অনুমতি’ তাঁদের ছিল না। কিন্তু, যুগ বদলাচ্ছে। আসছে নারী পুরুষ নির্বিশেষে, যেকোনও মানুষের সমান অধিকারের প্রশ্ন। এই প্রশ্নের মুখেই সমাজকে দাঁড় করান নন্দিনী ভৌমিক নামের এক পুরোহিত। তাঁরই সংগ্রামের কথা উঠে আসে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিতে। তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করেন ঋতাভরী।
কিছুদিন আগে বিয়ে হল ঋতাভরী চক্রবর্তীর দিদি, চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তীর। নন্দিনী ভৌমিকের তত্ত্বাবধানেই সুসম্পন্ন হল এই বিবাহ। এই বিবাহের একটি বিশেষ দিক আছে। এই বিবাহের পদ্ধতি আমাদের পরিচিত বিবাহ পদ্ধতির থেকে আলাদা। এই বিবাহে নারী এবং পুরুষের সমান অধিকারের জন্য, উভয়েই উভয়কে সিঁদুর দান করেন। এই বিবাহকে বৈদিক বিবাহ বলা হয়ে থাকে। চিত্রাঙ্গদা এবং তাঁর স্বামী সম্বিৎ চ্যাটার্জীর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। অসাম্য মুছে, নারী পুরুষের মধ্যকার সাম্য গড়তেই তাঁদের সিঁদুর দানের মুহুর্ত সামাজিক মাধ্যমে ভাগ করে নেন বড় পর্দার ‘শবরী’। সেই ছবি ঘিরে শুরু হয় চরম কটাক্ষের বন্যা। এমনকি ঋতাভরী চক্রবর্তী সম্প্রতি সমুদ্রের ধারে কিছু ছবি পোস্ট করাতেও উপচে পড়ছে নারী বিরোধী কমেন্ট। জনৈক নেটিজেন প্রশ্ন করেছেন, ‘আরে দিদি, পৈতে টা কোথায়? মহিলা পুরোহিতের হেজ নামাতে হবে তো নাকি….’।
যদিও ভালো কমেন্টও এসেছে অভিনেত্রীর কমেন্ট বক্সে। কিন্তু খারাপের আধিক্য বেশি থাকায়, বাধ্য হয় কমেন্ট বক্স বন্ধ করে দিতে হয়েছে ছোট পর্দার এই ‘ওগো বধূ সুন্দরী’টিকে।