বর্তমান সময়ে সবকিছুই আধুনিক যেমন হচ্ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মোবাইল ফোনের, ল্যাপটপের, টিভির নেশা। বড়রা তো বটেই, বাচ্চারাও এই নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে। ফলে সমস্যা বাড়ছে বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে। শুধু স্কুলে বা বাড়িতে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গেলেই তো আর হলো না; পড়াশোনা ঠিকমতো করতেও তো হবে। তাহলে এখন উপায়? দেখুন তো নিচের এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করে! বাচ্চা পড়তে আগ্রহী হবেই আমাদের মতে।
১) পরিবেশ:
বাড়িতে আগে পড়াশোনার পরিবেশ গড়ে তুলুন। বিদ্যা কিন্তু সাধনার বিষয় তাই যাতে বাচ্চা পড়াশোনাতে মনঃসংযোগ করতে পারে সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।
কী কী বিষয় মাথায় রাখবেন?
i) বাচ্চাকে অযথা সবসময় বকাবকি করবেন না।
ii) পড়তে বসার সময় বাচ্চার কাছে মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদি রাখবেন না।
iii) বাচ্চা যে ঘরে পড়তে বসবে, তার পাশের ঘরেও উচ্চস্বরে টিভি, ল্যাপটপ, ফোনে কিছু দেখবেন না। এতে বাচ্চার মনঃসংযোগ নষ্ট হয়।
২) খুঁত ধরা:
সব বাচ্চার বোধ বুদ্ধি সমান হয়না। বাচ্চারা ভুল করতে করতেই শিখবে। বাচ্চার সামনে কখনো অন্য বাচ্চার সুনাম অথবা বাচ্চা ভুল করলে সেটাকে নিয়ে মজা করা; এসব করবেন না। বাচ্চা এতে লজ্জায় পড়াশোনা করতেই চাইবে না।
৩) ক্লান্তি:
বাচ্চাকে পড়তে বসানো নিয়ে জোর করবেন না। অনেক বাচ্চাই পড়ে কম, খেলে বেশি আর তাতে ক্লান্তিতে ঘুম আসে তার চোখে। জোর করবেন না। বাচ্চার অন্তত সারাদিনের মধ্যে ৮ ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই দরকার। বাচ্চা ঠিকভাবে ঘুমোলে তার শরীর ও মন, দুটোই চনমনে থাকবে এবং সে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে চেষ্টা করবে।
৪) যোগাসন:
আমরা প্রায় সকলেই জানি যে যোগাসন বা নিয়মিত ব্যায়াম কতটা উপকারী। এই অভ্যাস শিশু বয়স থেকেই আনুন আপনার বাচ্চার মধ্যে। World Health Organisation বা WHO এর মতে কিন্তু যোগাসন বা ব্যায়াম বাচ্চাকে পড়াশোনায় আগ্রহী করতে সাহায্য করে।এর সাথেই তাকে দিন পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য। এই দুটো জিনিসের মিলনে পড়াশোনায় অনেক সুবিধা হবে।
৫) পুঁথিগত নয় বরং গল্প, নাচের ও গানের মাধ্যমে শিক্ষা:
বর্তমানে অনেক স্কুলেও এই নিয়ম শুরু করা হয়েছে বাচ্চাদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলার জন্য। পুঁথিগত ভাবে না বরং গল্পের ছলে, নাচ বা গান করে অথবা নাটক করে বাচ্চাকে বোঝানো হলে বাচ্চা আগ্রহী হয় এবং মনেও রাখতে পারে বেশি সেই বিষয়ে কারণ আমরা সকলেই জানি যে কানে শোনার থেকে চোখে দেখার স্মৃতি বেশি মনে থাকে আমাদের। খেলার ছলে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলুন বাচ্চাকে।
সবশেষে মনে রাখবেন যে সব বাচ্চা সমান হয়না। কোনো বাচ্চা শান্ত হয় তো কোনো বাচ্চা চঞ্চল, কোনো বাচ্চা সহজেই বোঝে আবার কোনো বাচ্চা ১০ বার বোঝালে তবে বুঝতে পারে। তাই বাচ্চাদের পড়াশোনা করানোর সময় একদম অধর্য হবেন না। শান্ত মেজাজ নিয়ে বাচ্চাদের পড়াবেন।