পুরাণে তিনি পবিত্র। ঠিক তেমনই রোজকার জীবনে তার স্থান অদ্বিতীয়। তাই তো ঘরে ঘরে চলে তার আরাধনা। তুলসী গাছ, সকালে উঠে তাকে পুজো এবং মন্ত্রচারণের মাধ্যমে শুরু হয় হিন্দুদের দিন। এই তুলসীরই কিন্তু শরীর পরিচর্যার ক্ষেত্রে জুড়ি মেলা ভার। ত্বক থেকে চুল, সকল পরিচর্যাতেই পারদর্শী এই উদ্ভিদ।
তুলসী একটি সুগন্ধযুক্ত বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। ভারতের প্রাচীন চিকিৎসা, আয়ুর্বেদ থেকে শুরু হয়েছে এই সবুজ জীবনদায়ী উদ্ভিদটির ব্যবহার। শরীরের ক্ষেত্রে তুলসী যেভাবে উপকার করে, তা নিম্নরূপ।
ব্রণ– ব্রণ একটি অতি গুরুতর সমস্যা আমাদের জীবনের। কিন্তু এটি প্রতিরোধেও তুলসীর জুড়ি মেলা ভার। তুলসীতে থাকে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে গিয়ে, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হলে ব্রণ হয়। তাই প্রতিদিন কয়েক কুঁচো তুলসী পাতা, বা সকালে উঠে তুলসীর রস খেলে খালি পেটে, ব্রণর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ত্বকের বার্ধক্য রোধ – তুলসীতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, যা ত্বকের বার্ধক্য হ্রাস করে। আমাদের ত্বক সহজে বার্ধ্যকের দিকে এগিয়ে যায়। তুলসী তার অনেকটা উপশম করে।
চর্মরোগ প্রতিরোধ – তুলসীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান অতিবেগুনি রশ্মি এবং পরিবেশের বিষাক্ত উপাদান থেকে চামড়াকে রক্ষা করে। তাই চামড়ার ক্ষতি রুখতে তুলসী পাতা চিবনো এবং তুলসীর রস পান করা আবশ্যক।
চুল পড়া প্রতিরোধ –
আয়ুর্বেদে, চুল পড়া বা পাতলা হওয়া রোধ করতে এবং চুলের ঘনত্ব উন্নত করতে তুলসি ব্যবহার করা হয়। মনে করা হয় যে তুলসীর প্রদাহ-বিরোধী উপাদান চুলের বিকাশকে উদ্দীপিত করতে পারে। যার ফলে চুল পড়া প্রতিরোধ হয় এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো হয়।
খুশকি – ব্যাকটেরিয়া শুধু নয়, ছত্রাক বা ফাংগাল জাতীয় ইনফেকশনের কারণে মাথায় খুশকির প্রবণতা বাড়ে। তুলসীতে অ্যান্টিফাংগাল উপাদান থাকার দরুন, খুশকি প্রতিরোধে তুলসীর অবদান বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণ, পেটের সমস্যা দূরীকরণের জন্য তুলসীর গুণাগুণ বেশ প্রকট।
সতর্কতা : তুলসী নিঃসন্দেহে একটি উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ। কিন্তু তবুও শরীরের উপকারে তুলসীর প্রয়োগের জন্য একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।