“চলো যাই চলে যাই, দূর বহু দূর…” একটানা ব্যস্ত রোজনামচার মধ্যে দিয়ে দিন কেটে যাওয়ার পর মনে হয়, এবার একটু সময় হয়েছে খানিক অবকাশ যাপনের! মন চায়, জিনিসপত্র গুছিয়ে পিঠে রুকস্যাক নিয়ে চলে যাই কোনও দূর অজানার রাজ্যে.. কাছে হোক বা দূরে, সে পাহাড় হোক বা জঙ্গল, বা সমুদ্র, কিছুদিনের জন্য প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিলেই যেন আত্মসুখ লাভ করা যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা ভ্রমণপ্রেমী, অথচ গাড়িতে করে দীর্ঘ সফরে তাঁদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। একটানা গাড়িতে করে সফর করার দরুন শরীরের মধ্যে ক্লান্তি ভাব জাগ্রত হয়। এর ফলে শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহের ঘাটতি দেখা যায়। এমনকি শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিয়ে ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। অনেকেরই দীর্ঘ যাত্রার সময় মাথা ঘোরা অথবা গা গুলিয়ে যাওয়ার মত প্রবণতা দেখা যায়। এমনকী বমি পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু তা বলে কি কখনও কোথাও সফর করা যাবে না? নিশ্চয়ই যাবে। কিন্তু তার জন্য আগে থেকে কিছু বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে রাখা দরকার। স্থায়ী না হলেও, কিছু ঘরোয়া টোটকা আছে ‘মোশন সিকনেস’ কে প্রতিকার করার জন্য। তবে সবকিছুর পূর্বে, চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ নেওয়া একান্ত কাম্য।
পর্যাপ্ত জল পান– আমাদের শরীরের নিয়ন্ত্রক হল জল। জল পান যেকোন সমস্যার মূলেই যেন হয়ে ওঠে এক এবং অদ্বিতীয় রক্ষক। তাই সফর শুরুর আগে হোক বা সফর চলাকালীন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যাপ্ত পরিমাণ জল গ্রহণ করে যেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শরীর যেন কখনও জলশূন্যতায় না আক্রান্ত হয়।
খাদ্য গ্রহণ– জলের সঙ্গে খাদ্য গ্রহণের দিকেও নজর রাখতে হবে খালি পেটেও যেমন একেবারে থাকা চলবে না, সফর শুরুর আগে তেমনই তেল বা মশলা জাতীয় খাবারও এড়িয়ে যেতে হবে। অ্যালকোহল সেবন একেবারেই চলবে না।
আসন বাছাই– আপনি যদি ‘মোশন সিকনেস’ অথবা গাড়িতে উঠলেই বমি প্রবণতা দ্বারা আক্রান্ত হন, তাহলে অবশ্যই গাড়ির আসন বাছাইয়ের দিকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কখনওই পেছনের দিকে আসন নির্বাচন করবেন না। সামনের দিকে মুখ করে যাওয়া যায় এমন আসনই আপনার জন্য উপযুক্ত। এবং জানলার ধারে বসার চেষ্টাও করতে হবে। টাটকা বাতাসের সংস্পর্শে থাকলে শারীরিক সমস্যার দূরীকরণ হয়।
জোয়ান– গা বমি ভাব কাটানোর জন্য জোয়ান সঙ্গে রাখুন এছাড়াও লবঙ্গ বা চুইংগাম আপনাকে এই জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
পুদিনা পাতা– কোনও কারনে এসিডিটি হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কয়েক কুঁচি পুদিনা পাতা মুখে দিয়ে নিন, এর ফলে শরীরের ভেতরকার অম্লত্ব ভাব অনেক নিরাময় হয়ে যাবে।
লেবু– লেবু আমাদের জীবনের নিত্যদিনের একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় দোসর। দীর্ঘ সফরে শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে, লেবু আপনার জীবনদায়ী হয়ে উঠতে পারে। এক কুঁচি লেবু অথবা একটি গন্ধরাজ লেবুর পাতা নাকের কাছে ধরে তার ঘ্রাণ গ্রহণ করুন। এর ফলে বমি ভাব অনেক কেটে যায়।
আদা– সফর শুরুর আগে এক টুকরো আদা দাঁতে কেটে নিন। আদার গুণমানের জন্য এটি আপনাকে ‘মোশন সিকনেস’ এর হাত থেকে রক্ষা করবে।