সরস্বতী পুজোর ইতিকথা জানুন আজ টেকটকির সাথে!

সামনেই বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা। পাড়ায় পাড়ায় চলছে তার প্রস্তুতি পুরোদমে। স্কুলেও চলছে প্রস্তুতি। কচিকাঁচাদের ভিড় রাস্তায় রাস্তায়। ছোটো থেকেই এই পুজো নিয়ে এক আলাদাই উন্মাদনা কাজ করে বাচ্চাদের। চাঁদা তোলা, আল্পনা দেওয়া, মণ্ডপ সাজানো, প্রতিমা আনা, প্রতিমা সাজানো সবকিছুই ভীষণ আগ্রহের সৃষ্টি করে। এর সাথেই সরস্বতী পুজোর আগে কুল না খাওয়া ইত্যাদি বিধিনিষেধও থাকে। পুজোর দিন খুদে থেকে কিশোর কিশোরীদের বা যুবক যুবতীদের শাড়ি আর পাঞ্জাবির ভিড় চোখে পরে। তবে সবাই কিন্ত এই পুজোর ইতিকথা বা তাৎপর্য জানেন না। আজ আমরা জানাবো আপনাদের সেইসব কথা।


কাহিনী ও পুরাণ অনুযায়ী, ত্রিদেবের মধ্যে দেব ব্রহ্মার মুখ থেকে দেবীর জন্ম। দেবীর সমস্ত সৌন্দর্য ও দীপ্তির উৎস হলেন ব্রহ্মা! বাগদেবী হিসেবে এই দেবীর বাসস্থান বলা হয় জিহ্বা অর্থাৎ জিভকে। দেবী শ্বেতবস্ত্র ধারণ করেন যা শুদ্ধতা বা পবিত্রতার প্রতীক। কথায় আছে, “রূপে লক্ষী, গুণে সরস্বতী” তবে দেবী নিজেই রূপ ও গুণের প্রতিচ্ছবি! ঋকবেদে দেবী সরস্বতীকে নদীরূপে কল্পনা করা হয়েছে যিনি নদীর মতোই কর্মের দ্বারা প্রবহমান! দেবীর মোট চার হাত। এক হাতে থাকে বই ও ওপর হাতে থাকে বীণা। অন্য দুই হাতে থাকে বেদ ও রুদ্রাক্ষের মালা। বীণা থাকার অর্থ সবাই জানেন, কারণ দেবী হলেন সঙ্গীতের বাহক। তাই সঙ্গীতশিল্পীকে অনেকে বলেন যে “কণ্ঠে তাঁর দেবীর বিরাজ!” এছাড়া পুরাণ অনুসারে, শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করার সময় যে দেবীর চিত্র কল্পনা করা হয়েছিল তিনিই দেবী সরস্বতী!


দেবীর বাহন সাদা রাজহংস। সাদা রঙের মানেই শুদ্ধতার প্রতীক ও এই রাজহংসটিও নাকি ভীষণ তুখোড় বুদ্ধি ধারণ করে। এমনকি জল মিশিয়ে দুধ দিলে নাকি এই রাজহাঁস সেই দুধের জল ও দুধ আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারে। দেবীর পুজোর মাধ্যমে শুধু বিদ্যাবুদ্ধি পাওয়া যায় তাই না বরং শৃঙ্খলাবোধ, ধৈর্য্যর শিক্ষা দেন দেবী। সকাল সকাল স্নান করে শুদ্ধ বসনে দেবীর পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি দিতে হয়।
পুরাণ অনুসারে বসন্তপঞ্চমীতেই দেবীর জন্ম। দেবী সরস্বতীকে ‘সকল বেদের মা’ বলা হয়! সমস্ত শব্দ ও ভাষার উৎপত্তি তাঁর থেকে হয়েছিল বলেই তাঁকে বাগদেবী নামকরণ করেন স্বয়ং দেব ব্রহ্মা! তবে আমাদের রাজ্যসহ প্রায় সব জায়গাতেই দেবীকে মা দুর্গা ও দেবাদিদেব মহাদেবের বড়ো মেয়ে বলেই মনে করা হয়। বৌদ্ধধর্মে আবার দেবীকে ‘মঞ্জুশ্রী’ নামে আরাধনা করা হয়।


এই হলো দেবীর ইতিকথা ও তাৎপর্য। এই কাহিনী সবার সাথে শেয়ার করুন যাতে অনেকেই অনেক কিছু জানতে পারে।

Scroll to Top