‘ওল খেয়ো না, ধরবে গলা’
-এই ছড়াটি আমরা প্রায় প্রত্যেকেই ছোটবেলায় পড়েছি।ওখানে ওল খেতে বারণ করা হলেও, মোটেও তা করা উচিত না। এই সবজিটির কিন্তু প্রচুর গুণাগুণ। জেনে না থাকলে জেনে নিন আজই।
বাঙালি হেঁশেলে ওলের প্রচলন দীর্ঘ দিন ধরে। ডালনা, ওলের বড়া, তরকারি বা স্রেফ সিদ্ধ ওল মাখা। গলা যাতে না চুলকায়, সেই জন্য দেওয়া হয় নারকেল সর্ষে বাটা বা লেবুর রস।অনেকে আবার চিংড়ি মাছের পদও তৈরি করে ফেলেন ওল দিয়ে।
ওলের গুণাগুণ ও অজানা তথ্য নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
i) হিন্দিতে Jimikand এবং ইংরেজিতে Elephants Foot নামে পরিচিত এই সবজি খাওয়া হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতেও।
ii) মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য ওল খুবই উপকারী। মাটির তলার এই কন্দ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস।
iii) এই উপাদানগুলির জন্য ওল খেলে স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ হয়। মনসংযোগ বাড়ে যে কোনও বিষয়ে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য খুবই উপকারী। তাদের ডায়েটে রাখা দরকার এই সবজি।
iv) শরীরে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে ওল। তাই মহিলাদের জন্য এই সবজি খুবই প্রয়োজনীয়। ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা শরীরে বাড়িয়ে তোলে ওল। ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ এই সবজি পিএমএস সিন্ড্রোম সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে।
v) ওল একদিকে প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক এবং একইসঙ্গে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। পেটের তথা পরিপাক স্বাস্থ্য ভাল রাখে এই সবজি। শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থ সরিয়ে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করে।
vi) যেহেতু এই সবজিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে আছে, তাই শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ওল। পুষ্টিকর লো ফ্যাট ডায়েটে ওল অপরিহার্য।
তবে উপকারিতার মতো ওলে আছে কিছু ক্ষতিকর দিকও। সে বিষয়েও জেনে রাখা উচিত। জেনে নিন।
ডায়েটে অতিরিক্ত পরিমাণে ওল না রাখাই উচিত। নয়তো উপকারের বদলে ক্ষতিসাধন করতে পারে এই সবজি।অন্তঃসত্ত্বা এবং নতুন মা যাঁরা সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন তাঁদের ডায়েটেও ওল বুঝেশুনেই রাখতে হবে।
বিঃ দ্রঃ: এই পরামর্শগুলো গ্রহণ করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।