গ্রীষ্মকালে এক কোয়া তরমুজ খাওয়ার মত আরাম বোধ হয় খুব কমই পাওয়া যায়! রসালো এই ফলটি, দিনের যেকোনো সময় খাওয়া যায়। তরমুজ যেমন পেট ভরায়, সেরকম শরীরকেও ঠান্ডা রাখেন। শুধু তাই নয় গ্রীষ্মকালে তরমুজে হয়ে ওঠে শরীর-বান্ধব সম্বল। শরীরকে ঠান্ডা রাখা ছাড়া আরও বিভিন্ন গুনাগুনে সমৃদ্ধ এই ফল। একশো গ্রাম 0.৬ গ্রাম প্রোটিন, ৭.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ৬.২ গ্রাম চিনি এবং 0.৪ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। তরমুজের জল রয়েছে প্রায় ৯১ শতাংশ।
মিষ্টি সুস্বাদু এ ফলটি বেশিরভাগ মানুষেরই প্রিয়। তবে তরমুজের গ্লাইসেমিক (Glycemic) সূচক ৭২ থাকায়, তা ডায়াবেটিক রোগীদের পক্ষে খাওয়া উচিত নয়। যেহেতু তরমুজে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে, তাই কয়েকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী যারা ডায়াবেটিক নন তারা পরিমিত ভাবে তরমুজ খেতে পারেন। তরমুজ খেলে, আপনি যে সুবিধাগুলো পাবেন সেগুলি নিম্নরূপ।
শরীরকে জল প্রদান করা– তরমুজের প্রায় ৯১ শতাংশ জল থাকে। তাই তরমুজ গ্রহণ করলে, শরীরে জলের ঘাটতি ঘটবে না। আপনার শরীর এবং ত্বক সতেজ থাকবে, এবং রক্ত সঞ্চালনও সুসঙ্গত থাকবে। তরমুজ হজম প্রক্রিয়াকেও মসৃণ করে তোলে। বিপাক ও ক্ষুধার ব্যাপারেও এর ভূমিকা অমূল্য।
ওজন হ্রাস-নন ডায়াবেটিক মানুষের প্রাতরাশে তরমুজ রাখা যেতে পারে কারণ প্রাতরাশ এ তরমুজ গ্রহণ করলে আপনার শরীর সারাদিন হাইড্রেটের থাকবে তরমুজে অ্যান্টি ক্যালরি উপাদান থাকে যা অতিরিক্ত ক্যালরিকে পুড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
কিডনিকে সুস্থ রাখা– তরমুজ পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম এর একটি বড় উৎস যা আপনার শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে যার ফলে কিডনির রোগের সম্ভাবনা কম হয়।
পেশীর ব্যথা উপশম – তরমুজে একপ্রকারের যৌগ হয় এল সিট্রোলিন (L-citrulline) যা পেশীর ব্যথা উপশম করে এবং শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া পেশী শিথিলতাকেও মেরামত করে তোলে। বিশেষজ্ঞরা শরীরচর্চার আগে তরমুজের রস পান করার পরামর্শ দেন।
ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস – প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তরমুজ ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। তরমুজে ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরে ক্ষতিকারক মৌল গঠনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই ক্ষতিকারক মৌলগুলিই ক্যান্সারের কারণ হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও তরমুজে উপস্থিত লাইকোপিন (Lycopene) প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত। লাইকোপিন, ইনসুলিন হ্রাস করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে মনে করা হয়, যা কোষের বিভাজনের জড়িত একটি প্রোটিন।