বছর চব্বিশের টাটকা তরতাজা প্রাণটা আর নেই, তার প্রায় দু মাস হতে চলল। গত ২০ নভেম্বর সকল ইহলৌকিক বন্ধন ছিন্ন করে, না ফেরার এক অজানা পৃথিবীতে পাড়ি দেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। শেষ বিন্দু দিয়ে তিনি লড়ে গেছিলেন জীবন যুদ্ধে। গভীর কোমায় থাকা সত্ত্বেও প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর (Sabyasachi Chowdhury) কণ্ঠস্বরই হয়ে উঠেছিল তাঁর ‘স্টিমুলি’। আশায় বুক বেঁধেছিলেন অনুরাগীরাও। কিন্তু নিয়তির পরিকল্পনা যে আমাদের ভাবনা চিন্তার বৃত্তে আবদ্ধ থাকে না। সে যে কিছু সময়ের ক্ষেত্রে বড় নিষ্ঠুরও। তাই তো, কেড়ে নিলো চব্বিশটা বছরের এই ‘জীবনজ্যোতি’ কে।
ঐন্দ্রিলার না থাকা এখনও মেনে নিতে পারেননি কেউ। মানা সত্যিই যায় না। কিন্তু গত বুধবার এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটল সামাজিক মাধ্যমে (Social Media)। আর তাতেই আলোড়ন সৃষ্টি হয় জনতার মধ্যে। ঐন্দ্রিলার ফেসবুক একাউন্ট থেকে, তাঁর এবং সব্যসাচীর ছবি পোস্ট করা হয়, সঙ্গে ক্যাপশনে যোগ করা হয় ‘গুড মর্নিং এভরিওয়ান’! অবাক কান্ড! কিভাবে সম্ভব এমন? পোস্টের কমেন্ট বক্স উপচে পড়ে বিস্ময় বোধক চিহ্নে!
অনেকেই ভাবেন ঐন্দ্রিলার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কেউ, অর্থাৎ কোনও সহকারী এই কান্ডটি ঘটিয়েছেন! এইভাবে ঐন্দ্রিলাকে ‘অমরত্ম’ লাভ করতে দেখে কিছু অনুগামী যেমন আবেগে ভেসে গেছেন তেমনই আবার কিছু নেটিজেন এই ঘটনার বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, মৃত ব্যাক্তির প্রোফাইল ব্যাবহার করা মানে, তাঁর পরিবারকে অতিষ্ঠ করে তোলা।
কিন্তু সকল জল্পনা, প্রশ্ন, বিস্ময়কে স্থগিত করে দিয়ে, পোস্টের কমেন্ট বক্সে উপস্থিত হয়েছেন ঐন্দ্রিলার মা, শ্রীমতী শিখা শর্মা (Shikha Sharma)। জানিয়েছেন, এই মুহুর্তে তিনিই এই ফেসবুক প্রোফাইলটি নিয়ন্ত্রণ করছেন। বাঁচিয়ে রাখতে চাইছেন এইভাবেই, তাঁর পরম আদরের ‘মিষ্টি’কে। তাই কে কি বলল, তাতে তাঁর কিচ্ছু এসে যায় না। কারণ, হারানোর যন্ত্রণা তাঁর মত আর কারুর হওয়ার নেই। তাই, তাঁর সন্তানকে নিয়ে তিনি কি করবেন, সেটি একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত।
শিখা দেবীর এমন উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেক অনুগামী। প্রসঙ্গত, প্রায় চোদ্দ বছর পর শিখা দেবীর শরীরেও ফিরে এসেছে কর্কট রোগ। আগামী ১৩ জানুয়ারি হবে তাঁর অস্ত্রপ্রচার। ঐন্দ্রিলার শুভাকাঙ্খীরা, শিখা দেবীর জন্য এখন প্রার্থনায় ব্রতী হয়েছেন।