‘ইন্দুবালা’ চরিত্রটি আমার ঠাকুমার কথা মনে করায়; সূহত্র মুখার্জী

‘একেন বাবু’র যথোপযুক্ত সহযোগী থেকে ‘গোরা’র ভরসার ভিত, অথবা বাড়ির নতুন বউ ‘ইন্দু’র নতুন পারিপার্শ্বিকতার এক নিরাপদ ঠাঁই, অভিনেতা সূহত্র মুখার্জী (Suhotra Mukherjee) তাঁর অভিনীত এই চরিত্রগুলি দিয়ে মানুষের মনে বেশ প্রকট ভাবে রাজ করে ফেলেছেন। সম্প্রতি তাঁর অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘ডাকঘর’ মুক্তি পেয়েছে। যদিও গতকাল, অর্থাৎ ক্যালেন্ডারের হিসেব মত ৮ মার্চ ছিল বিশ্ব শ্রমজীবী নারী দিবস। সেদিন মুক্তি পেয়েছে কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যাস, “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল”। এই ওয়েব সিরিজটিতেও এক বিশেষ চরিত্রে দেখা গেছে সূহত্রকে।

দেশভাগের যন্ত্রণা, এবং স্বজনহারার মর্মান্তিক বিচ্ছেদের এক ধূসর আবহ তৈরি হয়েছিল স্বাধীনতা পূর্বত্তর এপার বাংলায়। কাঁটাতারের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে, শয়ে শয়ে মানুষ আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন ভারতমাতার বুকে। এমন চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছিল অস্তিত্ব সংগ্রামের লড়াই। সংসারের হাল ধরার জন্য মানুষ বেছে নিতে শুরু করেন বিভিন্ন রকম পেশা। বাদ যাননি নারীরাও। তাঁরাও শক্ত হাতে হাল ধরতে ব্রতী হন।

এমন এক প্রেক্ষাপট ফুটে উঠেছে কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যাস “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল” এ। সেই উপন্যাসের রুপোলি পর্দায় চিত্রণ ফুটে উঠল পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্যের হাত ধরে। ইন্দুবালার চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুভশ্রী গাঙ্গুলি (Subhashree Ganguly)। ইন্দুবালার মত অসংখ্য উদ্বাস্তু নারী, যাঁরা সংসারের একমাত্র নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসে এই সিরিজ মুক্তি পেয়েছে।

দেশভাগের সেই করুন মানসিক ক্ষত চিহ্ন, আজন্ম বহন করে চলেছেন আমাদের পূর্বসূরীরা। এই সিরিজ তাই ইতিমধ্যে দু দেশের মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। অভিনেতা সূহত্র জানিয়েছেন, এই সিরিজে তিনি তাঁর ঠাকুমাকে খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল অনেক কারণেই আমার সাথে রয়ে যাবে।। তবে সবচেয়ে বড় কারণ মনে হয় এই গল্প আর ইন্দুবালা চরিত্রটি আমার ঠাকুমার কথা মনে পড়ায়। কারণ তাঁর মুখে শুনে শুনেই একটা অচেনা জায়গা চিনেছিলাম, তাঁর কথাতেই, স্মৃতিতেই সেই জায়গার গন্ধ পেয়েছিলাম৷৷ সে সারাজীবন চেয়ে এসেছিল আর একবার নিজের দেশের বাড়ি, সেই রাতারাতি ছেড়ে আসা সাজানো সংসার, সেই ছোটবেলাটাকে আর একবার দেখতে।। সময় সেই সুযোগ দেয়নি আর, তা পূরণ করার। সেই আক্ষেপ হয়তো সারাজীবন রয়ে যাবে।” এই সিরিজে অভিনয় করার প্রসঙ্গে অভিনেতা আরও বলেছেন, “এই গল্পে যুক্ত হতে পেরে তার কিছুটা আনন্দও হয়তো রয়ে যাবে ,যে আমার ছোটবেলা থেকে দেখা ইন্দুবালা না হোক, এ শহরের আরো অনেক ইন্দুবালার মধ্যে কোনো এক ইন্দুবালার গল্পে জড়িয়ে রইলাম৷”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *