বার্ধক্য, মানুষের জীবনের এই পর্যায়টি ঠিক যেন বালি ঘড়ির মত। শৈশব পেরিয়ে মানুষ যেমন ধাপে ধাপে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তেমনই বার্ধক্যে এলে যেন আচমকা সেই ঘড়ি উল্টে শৈশবের কক্ষে পৌঁছে যায়। আসলে বার্ধক্যে মানুষ, আবার শিশু হয়ে ওঠে। তখন তাঁর সন্তান যেন হয়ে ওঠেন তাঁর অভিভাবক। অভিজিৎ সেনের ছবি ‘প্রজাপতি’তে পরিচালক এমনই এক মিষ্টি মধুর চিত্রণ ফুটিয়ে তুলেছেন।
এই ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তী রয়েছেন এক বিপত্নীক পৌঢ় গৌড়বাবুর ভূমিকায়। তাঁর একমাত্র ছেলের চরিত্রে আছেন দেব। তিনি পেশায় ‘ওয়েডিং প্ল্যানার’ হলেও, নিজের বিয়ের কোনও বন্দোবস্ত করে উঠতে পারেননি। বৃদ্ধ গৌড়বাবুর তাই চিন্তা, তাঁর অবর্তমানে ছেলের সঙ্গী কে হবেন! এদিকে ছেলে বাবা-অন্ত প্রাণ। বাবাই তাঁর মা, বাবাই তাঁর বাবা।
আবার বাবাই এখন ছেলের সন্তান। তাঁদের সম্পর্কে যেমন আছে স্নেহ, ভরসা কিংবা আগলে রাখা, তেমনই আছে শাসন। তাই তো বৃদ্ধ গৌড়বাবু ছেলের আড়ালে ধূমপান করলেও, ছেলের উপস্থিতিতে ভিরমি খান। আবার শত শারীরিক প্রতিকূলতা থাকলেও, ছেলের মত করেই জীবনের প্রতি মুহূর্তে, ছেলের সঙ্গে জীবনের ছন্দে কোমর দুলিয়ে বাঁচতে চান। ছেলেকে খাবার তৈরি করে দেওয়া থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে তৈরি করে দেওয়া, সবটা গৌড়বাবু নিজের হাতে করেন। ছেলেও বাড়ি ফিরে তাঁর জীবনের ‘সুপারহিরো’ কে নিজের হাতে খাইয়ে দেন।
সন্তান কখনও মুখ ফুটে বলতে পারে না, বাবাই তাঁর কাছে একমাত্র প্রিয় ‘হিরো’! কিছু কথা অব্যক্তই থেকে যায়। কিন্তু কাজ কখনও নির্বাক হয় না। বাবা তথা অভিভাবকে সন্তানরাও তাঁদের কাজ দিয়েই বলে ওঠেন ‘তুমি আমার হিরো’। এই ছবিতেও এমনই এক প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয়েছে অনুপম রায়ের কণ্ঠে।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন মমতা শঙ্কর, কৌশনী মুখার্জী, শ্বেতা ভট্টাচার্য, অম্বরিশ ভট্টাচার্য, কনীনিকা ব্যানার্জী, বিশ্বনাথ বসু, খরাজ মুখোপাধ্যায়ের মত চেনা মুখ।