মহালয়া থেকেই পূজো মণ্ডপে অকল্পনীয় ভিড়, কি কারন থাকতে পারে এর পিছনে

সাধারণত মহালয়ার দিন থেকে শুরু হতো বাজারে ঘাটে জামা কাপড়ের দোকানে অকল্পনীয় ভিড়, এক সপ্তাহ পর পুজো, তাই নিজেদেরকে নিজেদের পছন্দের সাজে সাজিয়ে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষায়। কিন্তু এবছর ভিড় জ্বর হয়েছে ঠিকই কিন্তু তা জামা কাপড়ের দোকানে নয়, বরং পূজা মন্ডপে। হ্যাঁ যেখানে আগে কলকাতায় মহালয়ায় ঘুরতে বেরোনোর রুটিনে থাকতো কুমোরটুলিতে মায়ের চক্ষুদান দেখতে যাওয়া আর গঙ্গার ঘাটে তর্পণ প্রত্যক্ষ করা, সেখানে এখন রুটিন বদলে দাঁড়িয়েছে পুজো দেখা অর্থাৎ মণ্ডপে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে যাওয়া। শ্রীভূমি সহ কলকাতার একাধিক পুজো মণ্ডপে মহালয়ার দিন থেকেই ঠাকুর দেখার জন্য লাইন দিয়ে ভিড় জমতে শুরু করেছে।

কারণ খুঁজতে গেলে একাধিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু তার মধ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটি হল বিগত দু বছরের কোভিড বিধিনিষেধ। করোনার প্রকোপের জন্য আগের দু’বছর কলকাতা শহর সম্পূর্ণ জনমানবহীন পুজো কাটিয়েছে। কিন্তু এই বছর সমস্ত বিধি নিষেধ থেকে মুক্তি পেয়েছে শহর, হয়তো সেই কারণেই কেউ আর ধৈর্য রাখতে পারছে না সপ্তমী অষ্টমীর সন্ধ্যার। এছাড়াও মাসখানেক আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শোনা গেছে, পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই তাই কোলকাতাবাসি এবছরের পূজো নষ্ট হওয়ার কোনো রকমের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নয়, বৃষ্টি হওয়ার আগেই ঠাকুর দেখে নেওয়া শ্রেয় বলে মনে করছেন তারা।

অধিকাংশই পুজোর আনন্দে মেতে উঠলেও, জনগণের একাংশের মতামত এই ঠাকুর দেখতে যাওয়ার ধুমের মাঝে বিঘ্নিত হচ্ছে দুর্গাপূজার ঐতিহ্য। কারণ মহালয়ার দিনই দেবীর চক্ষুদান হওয়ার রীতি, তার আগে থেকেই মন্ডপে ঠাকুরের এসে যাওয়া মানে, রীতি অনুযায়ী দেবীকে প্রস্তুত করা হচ্ছে না।

মতভেদ থাকলেও, শহরে দুর্গা পুজোর আনন্দ আর উচ্ছাসে ভাটা পড়া অসম্ভব। এই কটা দিনই বাঙালীর সব দুঃখ, না-পাওয়া, বিচ্ছেদ ভুলে থাকার দিন। ভিড় বাড়লেও তার সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রিত হাওয়াই আকাঙ্ক্ষিত, যাতে এই আনন্দের দিনগুলি কারো জীবনে দুঃখ বয়ে না নিয়ে আসে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *