কথায় বলে, ভোজনরসিক বাঙালির জীবনের সেরা বন্ধন কিন্তু, রন্ধন। কারণ ‘বাসনার সেরা বাসা রসনায়’। রসে বশে বাঙালির কিন্তু চিরকালই বাড়ির সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার চল বেশ প্রকট। সম্প্রতি ২০০১ সালের একটি মেনু কার্ড ভাইরাল হতে তাঁরা যেমন ‘পুরানো সেই দিনের কথা’র আবেগে ভাসছেন, তেমনই অত্যধিক স্বল্প দাম দেখে মজা হিসেবে খোরাকও পাচ্ছেন।
২০০১ সালের মহানগরীর বুকে অবস্থিত কোনও এক রেস্তোরাঁর মেনু কার্ড সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে, এই যুগে যে খাবারগুলির দাম তিন অঙ্কের বেশি, সেই সময়ে সেই খাবারের দামই ছিল ৫০ টাকার মধ্যে।
সবচেয়ে স্বল্প মূল্যে উপলব্ধ ছিল রেস্তোরাঁটিতে রুমালি রুটি। মাত্র ১ টাকা ২৫ পয়সার বিনিময় পাওয়া যেত এটি। রুমালি রুটির পরে ছিল লাচ্চা পরোটার স্থান। মুল্য ছিল মাত্র ৫ টাকা! তারপরেই ছিল এগ রোল। মাত্র সাত টাকা মুল্য দিয়ে হয়ে যেত ভোজন রস তৃপ্ত। চিকেন বিরিয়ানি এবং মাটন বিরিয়ানির দাম ছিল ৩০ টাকা এবং ৩২ টাকা। সবচেয়ে দামী যে পদটি ছিল, মূর্গ মশালা, তার দাম ছিল ৮৫ টাকা।
আসলে, সেই পরিচিত প্রবাদই এখানেও খাটে। সময় বহিয়া যায়, নদীর স্রোতের ন্যায়! সময় যেমন ছোটে, সেরকমই সে নিয়ে ছোটে মানুষের চাহিদা, আবেগ, দায়বোধকে। ২০০১ সালে সেভাবে মানুষ যান্ত্রিক হয়নি, প্রযুক্তির ঔদ্ধত্য গ্রাস করেনি। এক ছাপোষা, নির্মেদ, আড়ম্বরহীন জীবন যাপন ছিল তাঁর। সেই জীবনে এই খাবারের দামই ছিল যুগের সঙ্গে মানানসই। এই যুগে দাঁড়িয়ে দেখলে সেই দিনগুলোর নির্মলতার কথাই মনে পড়ে। হয়ত আরও দশ বছর পর জীবন আরও পরিণত হয়ে উঠবে, তখন আবার এই জীবনের মাহাত্ম্য, টের পাওয়া যাবে।