প্রতিদিনের এক রুটিনমাফিক চলতে চলতে আমাদের সকলের জীবনেই আসে বিরক্তি, উদাসীনতা, একঘেঁয়েমি ও অবসাদ। এসবের ওষুধ হিসেবে আমরা কেউ গান শুনি, কেউ গান গাই, নাচ করি, লেখালেখি করি বা গল্পের বই পড়ি আবার উদ্ভিদপ্রেমীরা গাছের যত্ন নিই বা নতুন গাছ লাগাই। কিন্তু কখনো শুনেছেন কি যে একঘেঁয়েমি (Boredom) কাটাতে কেউ পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক (Dangerous) গাছ লাগাচ্ছেন যা কিনা ‘সুইসাইড প্ল্যান্ট’ (Suicide Plant) বা ‘আত্মহত্যাকারী উদ্ভিদ’ নামে খ্যাত!
অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি! ইউনাইটেড কিংডম (UK) বা যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী এক বিদেশী পুরুষ তাঁর একঘেঁয়েমি কাটানোর জন্য রোপন করেছেন ‘জিম্পি-জিম্পি'(Gympie-Gympie), যা কিনা বিশ্বের সবথেকে বেশি বিপদজনক (Dangerous) উদ্ভিদ নামে পরিচিত কারণ এই নিরীহ দেখতে গাছটিকে স্পর্শ করলে গাছটি তার হুল ফোটায় যা একইসঙ্গে গরম অ্যাসিড (Acid) দিয়ে পুড়ে যাওয়ার মতো এবং বিদ্যুৎপৃষ্ট (Electrocuted) হয়ে যাবার মতো অনুভব করাতে পারে। এছাড়াও এই গাছ বাড়িতে থাকলে তা মানুষকে প্রায়শই ধীরে ধীরে আত্মহত্যা (Suicide) করার মতো যন্ত্রণার পথে নিয়ে যেতে পারে। এই কারণেই এটিকে ‘সুইসাইড প্ল্যান্ট’ (Suicide Plant) বা ‘আত্মহত্যাকারী উদ্ভিদ’ বলা হয়।
এই ব্যক্তির নাম হলো এমলিন জোনস(Emlyn Jones)। তাঁকে এই অদ্ভুত কাণ্ডের কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন যে তিনি একঘেঁয়েমি (Boredom) অনুভব করছিলেন এবং সম্প্রতি তিনি তাঁর বাগানে কলার গাছ রোপন করেছিলেন। সেই গাছটিকে সুন্দর ভাবে বাড়তে দেখে তার এই জিম্পি-জিম্পি (Gympie-Gympie) গাছ বড়ো করার ইচ্ছে হয়। তিনি আরো জানান যে তিনি গত বসন্তে এই গাছ রোপন করেছেন তাই বৃদ্ধি পেতে এখনো বেশ কিছু সময় লাগবে।
এর আগে পাওয়া এক খবরে জানা গিয়েছিলো যে একজন মানুষ এই গাছের অংশকে টয়লেট পেপারের (Toilet Paper) মতো ব্যবহার করেন ও এর বিষক্রিয়ায় যন্ত্রণায় এতটাই পাগল হয়ে ওঠেন যে তিনি নিজেকে গুলি মেরে মৃত্যুবরণ করেন।
এই গাছের কোনো একটি অংশ যদি আপনার ত্বকের সংস্পর্শে আসে তবে সেটিকে আর আলাদা করা যায় না। সারা দেহে বিষ ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে।
৪৯ বছর বয়সী এমলিন জোনস (Emlyn Jones) একটি খাঁচার মধ্যে রেখেছেন এই গাছটিকে যার ওপরে ডেঞ্জার (Danger) চিহ্ন অঙ্কিত আছে। তিনি জানান যে তিনি অতিরিক্ত সতর্কতার সঙ্গেই এই গাছটিকে বড়ো করে তুলছেন। তিনি বলেন যে,”আপনি যদি সরাসরি গাছটিকে ধরতে যান তবে সেটি খুব খারাপ বুদ্ধি। আমি কনুই অবধি গ্লাভস পরে তবেই পরিচর্যা করি এবং এখনো অবধি কোনো বিপদ ঘটেনি। এছাড়া আমার কাছে ৩ শতাংশ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (Hydrochloric Acid) আছে যা এর বিষক্রিয়া কমাতে সক্ষম।”
আমাদের কাছে ওনার এই শখ ভীষণই ভয়ঙ্কর ও অদ্ভুত মনে হলেও তাঁর কাছে এটা আনন্দের। আমরা শুধু এটাই চাইবো যে উনি যেন সাবধানে থাকেন ও সুস্থ থাকেন।