এই পানীয়গুলি পান করলেই, গরমে পাবেন শীতলতার ছোঁয়া! জানুন বিষদে

মাঝে মাঝে শান্তনা স্বরূপ বৃষ্টি উঁকি মারলেও, সূর্যদেবের রোষ থেকে মুক্তি মেলা বড় ভার। তার ওপর যে সকল মানুষকে দিনের অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়, তাঁদের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠছে এই দাবদাহ। প্রখর উত্তাপে জলশুন্যতার ঝুঁকি থাকেই। ঘটতে পারে ডিহাইড্রেশন। কিন্তু ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি বাড়ির বাইরে থাকুন বা বাড়ির মধ্যে, তাপপ্রবাহ থেকে আরাম পেতে পারেন।
কিছু গ্রীষ্মকালীন মরশুমি ফল দিয়ে বানিয়ে ফেলুন স্বাস্থ্যকর পানীয়। যা পান করলে জলশুন্যতা প্রতিরোধের সঙ্গে, ফলের গুনাগুনেও আপনাকে সমৃদ্ধ করে তুলবে। খুব সহজভাবেই, বাইরে বেরোলে তাপরোধক পাত্রে করে আপনি সেই পানীয় পান করতে পারবেন।

আম পান্না –
বছরের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ফল আম। কেউ যদি কোনো কারণে গ্রীষ্মকে পছন্দ করে থাকেন, তার অন্যতম হেতু হল এই ফলের রাজা। পাকা আমের মত কাঁচা আমের কদরও বহুল প্রচলিত। কাঁচা আম দিয়ে তৈরি শরবত, আম পান্না একটি অতি উপাদেয় গ্রীষ্মকালীন পানীয়। আম, বিটনুন, ভাজা জিরে গুঁড়ো, চিনি, পুদিনা পাতা এবং বরফ হল এটির উপকরণ। ফুটন্ত জলের প্যানের মধ্যে কাঁচা আমটি রাখুন, ভিতর থেকে নরম হয়ে গেলে খোসা ছাড়িয়ে, ভালো করে পাল্প বেড় করে পেস্ট করে নিন। পেস্টটি অন্য একটি প্যানে দিয়ে চিনি যোগ করুন। চিনি গলে যাওয়া পর্যন্ত একটানা নাড়তে থাকুন। খেয়াল রাখতে হবে পেস্টটি যাতে না পোড়ে। এরপর আমের পেস্টে বাকি উপাদান যেমন জিরে গুঁড়ো, বিটনুন যোগ করুন। এরপর শরবতের আকারে পরিবেশন করার সময়, বরফ টুকরো এবং পুদিনা পাতা সহযোগে পানীয়টিকে পরিপূর্ন করে তুলুন।

বেলের শরবত-
একটি চামচ দিয়ে বেলের পাল্প বাড় করে নিয়ে বীজমুক্ত করার জন্য ছাঁকনিতে রাখুন। ধীরে ধীরে ম্যাশ করে বীজগুলি আলাদা করুন। পাল্প বীজমুক্ত হলে সেটি এক গ্লাস জলে চিনি সহ রাখুন। এরপর কালো গোলমরিচের গুঁড়ো, বিটনুন মেশান। তৈরি হয়ে গেলো আপনার বেলের শরবত। আপনি এটি ঠান্ডা করেও খেতে পারেন।

কোকুম শরবত –
ভারতের দক্ষিণে কঙ্কন উপকূলে কোকুম বহুল ব্যবহৃত ফল। এটির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ সহায়ক। এটির পানীয় তৈরি করতে কয়েকটি শুকনো কোকুম নিয়ে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর ম্যাশ করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি প্যানে সেই কোকুম, চিনি, ভাজা জিরে গুঁড়ো এবং বিটনুন যোগ করতে হবে। চিনি গলে যাওয়া পর্যন্ত মিশ্রণটি ভালো করে নাড়িয়ে নিতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য আপনি চাইলে মিশ্রনটিতে বরফ কুঁচি সংযোজন করতে পারেন। এইভাবেই তৈরি হয়ে উঠবে আপনার কোকুমের শরবত।

তরমুজের জুস –
এটির সঙ্গে আপনাদের সকলেরই সখ্য আছে। কম বেশি আপনারা নিশ্চয়ই অনেকেই এই গরমে তরমুজের রসকে সঙ্গী করেছেন। এটির নির্মাণ খুবই সহজ। তরমুজের লাল ভোজ্য অংশটি বীজমুক্ত করে ম্যাশ করে, উপযুক্ত মিশ্রণ বানিয়ে পান করতে হয়। ঠান্ডা তরমুজের জুস শরীরকে স্বর্গীয় তৃপ্তি দেয়।

আলু বোখারা ইমলি শরবত –
গ্রীষ্মকালে আলু বোখারা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হয় যা চোখের জন্য উপযোগী।
একটি প্যানে ইমলি এবং আলু বোখারা উভয়েই সিদ্ধ করুন। ফলের বাইরের চামড়া অপসারণ করে চালুনি দিয়ে ছেঁকে নিন। সেই পাল্প মিশ্রণে চিনি, লেবুর রস, ভাজা জিরে গুঁড়ো এবং বিটনুন যোগ করুন। মিশ্রণটি জলের সঙ্গে ভালো করে নেড়ে পরিমাণমতো পরিবেশন করুন।

বিশেষ সতর্কতা –
অনেকেই আছেন যাঁদের হয়তো সব ফল শরীরের পক্ষে উপযোগী হয়না। তাঁরা বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের পরামর্শ মতো তাঁদের জন্য উপযোগী শরবত পান করতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *