‘শিক্ষা’। একটি উভমুখি প্রক্রিয়া। শুধু শিক্ষক থেকে ছাত্রতেই প্রবাহিত হয় না। বরং ছাত্র থেকে শিক্ষকে, এমনকি যেকোনও মানুষ থেকেই যেকোনও মানুষের এই প্রক্রিয়া প্রবাহমান। আজ শিক্ষক দিবস। ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে, এই দিনটি উদযাপন করা হয়।
কে ছিলেন রাধাকৃষ্ণন?
জন্ম –
১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, তামিলনাড়ুর তিরুত্তানিতে জন্মগ্রহণ করেন এই কৃতী ব্যক্তিত্ব। পারিবারিক অবস্থা স্বচ্ছল ছিল না। দারিদ্রতাকে দোসর করেই এগোতে থাকে তাঁর যাত্রা।
অধ্যায়ন –
রাধাকৃষ্ণন কোনওদিন পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেননি। শত দারিদ্রতাকে তিনি তাঁর গন্তব্যের সিঁড়ি করেই, এগিয়ে গেছেন শিখরের দিকে। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খিষ্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর হন। তাঁর পাঠরত বিষয়টি ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’।
পারিবারিক স্বচ্ছলতা না থাকার দরুন, তিনি দাদার কাছ থেকে দর্শনের বই উপহার পান, এবং সেটিই ছিল তার জীবনে এগিয়ে যাওয়ার মূল মন্ত্র। তখনই তিনি ঠিক করে নেন, যে পড়লে দর্শন নিয়েই পড়বেন। আর এভাবেই রচিত হয় এক গর্বিত ইতিহাসের সূত্রপাত।
মাইসর বিশ্ববিদ্যালয়তে তিনি অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হন। সেসময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকাতেও লেখালেখি করতেন। এমনকি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়তেও তিনি অধ্যাপক হিসেবে নির্বাচিত হন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এই জ্ঞানী অধ্যাপকের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য উৎসুক থাকত। তাঁর অতুলনীয় জ্ঞান ভান্ডার এবং শিক্ষকতায় অনস্বীকার্য অবদানের জন্য, ১৯৩২ সালে তাঁকে নাইটহুড উপাধিতে সম্মানিত করা হয়। এছাড়াও ১৯৫৪ সালে তিনি ভারতরত্ন উপাধিতে ভূষিত হন।
মৃত্যু –
১৯৭৫ সালের ১৭ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান শিক্ষক। তাঁর গুণমুগ্ধ ছাত্ররা তাঁর জন্মদিনকেই ঘিরে পালন করে থাকেন শিক্ষক দিবস। সেই প্রচলন আজও বহমান।