বড়দিনে সান্তাক্লজ সেজে বাড়ির ছোটো সদস্যদের উপহার দিয়ে থাকেন? এই সান্তাক্লজের আসল পরিচয় জানেন কি? না জেনে থাকলে জেনে নিন।

রাত পোহালেই বড়দিন। বড়দিনকে প্রধানত যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। বড়দিনে সবাই আনন্দ করে কেক খাই, বাড়ি সুন্দর করে সাজাই আর অপেক্ষা করি মাঝরাতের বিশেষত বাচ্চারা কারণ মাঝরাতে তাদের সবার প্রিয় সান্তাক্লজ উপহার দিয়ে যাবে গোপনে। আদপে বাড়ির বড়োরাই ছোটোদের এই উপহার দিয়ে থাকেন। কিন্তু আদৌ কি সান্তাক্লজ সাজানো এক চরিত্র মাত্র? তাঁর কি আসল জীবনে সত্যিই কোনো অস্তিত্ব নেই? তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক এই সান্তাক্লজের প্রকৃত পরিচয়।
সকলের প্রিয় সান্তাক্লজের মতো ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে আছে অনেক কাহিনী। যেই কাহিনীটি বহুল প্রচলিত সেটিই আজ বলবো।


এখনকার টার্কি নামে খ্যাত শহরে চতুর্থ দশকে এক ছোট্ট বন্দর ছিলো ও শহরটির নাম ছিলো ‘মায়রাহ’। এই শহরেই বাস করতেন এক খ্রিষ্টান বিশপ সেন্ট নিকোলাস। সমুদ্রে বাণিজ্য করার আগে নাবিকেরা তাঁর থেকে আশীর্বাদ নিতে যেতেন। নতুন জীবন শুরু করার আগে নবদম্পতিও তাঁর থেকে আশীর্বাদ নিতে যেতেন। সময়ের ধারায় তিনি হয়ে ওঠেন সবার সন্ত নিকোলাস! এর পেছনেও এক কাহিনী আছে। সেই শহরেই বাস করতেন এক খুব গরীব দম্পতি। তাঁদের ছিলো তিন মেয়ে কিন্তু তারা বিবাহযোগ্যা হয়ে গেলেও টাকার অভাবে সম্ভব হচ্ছিল না এমনকি মেয়েগুলিকে পতিতালয়ে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। এই কথা কানে যায় সেন্ট নিকোলাসের। সেই রাতেই তিনি গোপনে ওই পরিবারের কাছে গিয়ে একটি টাকাভর্তি ব্যাগ রেখে আসেন। পরের দিন সকালে সেই দম্পতি উঠে টাকার ব্যাগ দেখে ঈশ্বরের দান ভেবে গ্রহণ করে কিন্তু মেয়েদের বিয়ে দেবার সময় কালের নিয়মে ধরা পরে যান নিকোলাস। সেদিন থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন সকলের প্রিয় সন্ত নিকোলাস।


এভাবেই ধীরে ধীরে দুঃখের পরিত্রাতা হিসেবে নিকোলাসের নাম ছড়িয়ে পরে ও সেন্ট নিকোলাস হয়ে ওঠে সবার প্রিয় সান্তাক্লজ। পরবর্তীকালে ১৮৮১ সালে থমাস ন্যাসট নামের এক কার্টুনিস্ট সান্তাক্লজের ছবি আঁকেন যাতে দেখা যায় একমুখ সাদা দাড়ি ও গোঁফ নিয়ে এক বয়স্ক মানুষ লাল কোট প্যান্টে হরিণটানা গাড়িতে চড়ে একটি লাল বড়ো থলেতে ব্যাগভর্তি করে উপহার নিয়ে গাড়ি টেনে বরফের রাস্তায় যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করে এই চরিত্রটি যা আজকের সান্তাক্লজ।


এইভাবেই সান্তাক্লজ সবার মনে আনন্দের রং ছড়িয়ে দিতে থাকুন। সবার মনের কালো দূর হয়ে আলো ছড়িয়ে পড়ুক। সান্তাক্লজ শুধু কোনো কাল্পনিক বা প্রকৃত চরিত্র নন, তিনিই বড়দিনের খুশির ফেরিওয়ালা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *