এই মুহূর্তে বাঙালি দুইভাগে বিভক্ত। এক, কঠিন বাস্তবের সঙ্গে নিত্যদিন যাঁরা ঘরকন্না করছেন, দুই হল রুপোলি পর্দার রূপকথার জগতের মায়ায় এখনও যাঁরা আবদ্ধ আছেন। অভিনেতা তথা পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্যের তুলির টান ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবিতে যাঁরা সত্যি এখনও চাক্ষুষ করেননি, তাঁরা এখনও ‘সব পেয়েছির দেশে’ পৌঁছতে পারেননি। অনির্বাণ ‘ম্যাজিশিয়ান’। আপনি যতই বাস্তববাদী
হন, যতই কঠিন হন, দু ঘন্টা ষোলো মিনিটের মধ্যেই এক আস্ত রূপকথায় কিভাবে যে আপনাকে বল্লভপুরনিবাসী করে তুলবেন, আপনি টের পাবেন না।
স্পর্ধার আর এক নাম বাদল সরকার। প্রখ্যাত এই নাট্যকারের নাটক নিয়ে তৈরি এই ছবি। অনির্বাণের পরিচালনা, সৌমিক হালদারের চিত্রগ্রহণ, বিভিন্ন নাট্য ব্যক্তিত্বদের পর্দায় অভিনয়, সব মিলিয়ে এই ছবি একেবারে দর্শকদের অন্তঃপুরে জমিয়ে এক চিরকালীন শিতঘুম দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিয়েছে। যা কখনও ভঙ্গ হবে না।
ছবিটিতে একটি গান শোনা গেছে সাহানা বাজপেয়ীর কণ্ঠে। গানটির নাম ‘সাজো, সাজাও’। রচয়িতা খোদ পরিচালক। সম্প্রতি এই গানটিই পুরুষ কণ্ঠে মুক্তি পেয়েছে। আর তাতেই দর্শক পুনরায় অনির্বাণের উদ্দ্যেশে বলে উঠেছেন, ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে হারাই ক্ষণে ক্ষণ…’ কারণ, এবারে যে কণ্ঠের জাদু ছড়ি তিনিই ঘুরিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে অবশ্য যোগ দিয়েছেন এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক দেবরাজ ভট্টাচার্য। বলা বাহুল্য, এই ছবির এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
৪০০ বছরের পুরনো বল্লভপুরের বাড়িটি ছবির প্রাণভূমি। সেখানে যেমন মানুষ দু একজন থাকে, তেমন থাকেন একজন অভিশপ্ত আত্মা। ভূত মানুষে আলাপ বিলাপ থেকে প্রেম, সব কিছু নিয়েই ‘খানিকটা দাঁড়িয়ে আছে’ এই প্রাচীন ইতিহাস। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন সত্যম ভট্টাচার্য, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, দেবরাজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। চলতি মাসেই ২১ অক্টোবর কালী পুজোয় মুক্তি পেয়েছে এটি। প্রত্যেকদিনই হল জুড়ে উপচে পড়ছে জনসমাগম। অনির্বাণ দেখিয়ে দিয়েছেন, কম বাজেটেও কিভাবে মানুষকে হিমনোটাইজ করে রাখা যায়।