আজকাল খবরে প্রায়শই প্রতারণার কথা শোনা যায়। অনেকে ডিজিটাল ভাবে প্রতারণা করেন, অনেকে আবার সশরীরে প্রতারণা করেন।
এমনই এক প্রতারকের সম্পর্কে জানা গেছে যাকে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় ঠগ হিসেবে মনে করা হয়। এই ব্যক্তি তাজমহল থেকে শুরু করে সংসদ ভবন পর্যন্ত সব কিছুই বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এমন কি ইনি যাকে তাজমহল বিক্রি করেছিলেন , তাকেও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি প্রকৃতপক্ষেই তাজমহলের মালিক হতে চলেছেন।
ইনি মিথিলেশ কুমার শ্রীবাস্তব।
বিহারের সিওয়ান জেলার বাংরা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন আইনজীবী হলেও, পাশাপাশি তিনি জনগণকে ঠকানোর কাজও শুরু করেছিলেন। প্রায় ৫০ বার নাম পরিবর্তন করে তিনি তার প্রতারণামূলক কাজকর্ম চালাতেন। তার দ্বারা প্রতারিত ব্যক্তিদের তালিকায় টাটা, বিড়লা, মিত্তাল এমনকি আম্বানির নামও আছে।
দেশের প্রখ্যাত ব্যক্তিদের স্বাক্ষর নকল করতে পারদর্শী ছিলেন মিথিলেশ। এই ভিত্তিতেই বড় বড় জালিয়াতি করার সুযোগ পান তিনি। সংসদ ভবন থেকে শুরু করে তাজমহল,লালকেল্লা এবং রাষ্ট্রপতিভবনও বিক্রি করেছিলেন তিনি। এমনকি তিনি তাজমহলও তিনবার বিক্রি করেছিলেন।
তার এই জালিয়াতির ফলস্বরূপ তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা জমা করা হয়। তাকে ধরার জন্য ভারতবর্ষের ৮টি রাজ্যের পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। মিথিলেশ কে ১১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও তিনি মাত্র ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করেন। পুলিশ তাকে ৯ বার গ্রেপ্তার করলেও প্রতিবারই ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান তিনি। শেষবার ১৯৯৬ সালে ৮৪ বছর বয়সী মিথিলেশ কে গ্রেপ্তার করা হলেও তিনি পালাতে সক্ষম হন।
শেষবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে, কানপুর জেল থেকে এইমস হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। কিন্তু নয়া দিল্লি স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান এবং তারপর থেকে তাকে আর কেউ কখনো দেখেনি। শোনা যায় ২০০৯ সালে তিনি মারা যান।
মিথিলেশের কাহিনী অনুযায়ী বলিউডে নির্মিত হয়েছে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘মিঃ নটওয়ারলাল’।