অভাবী সংসারের ভার বইতে ডেলিভারি এজেন্ট হয়ে গেলো ভারতের হয়ে খেলা পৌলমি অধিকারী।

একসময় ফুটবলে দেশের হয়ে খেলে, প্রতিনিধিত্ব করে, বিভিন্ন শংসাপত্র পেয়ে দেশকে গর্বিত করেছেন পৌলমি অধিকারী (Poulomi Adhikari)। কিন্তু আজ অভাবের তাড়নায় পেটে টান পড়ায় সব শংসাপত্র গুছিয়ে রেখে, ফুটবলের মাঠ ছেড়ে ফুড ডেলিভারি (Food Delivery) সংস্থার এজেন্ট হয়ে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। দিনশেষে মাত্র ৩০০ টাকা আয় তাঁর। কখনো কখনো আরো কম। তবু এটাই তাঁর এখন রুজি রোজগার।


সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে (Social Media) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে যে একটি তরুণী ফুড ডেলিভারি সংস্থার জামা পরে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। চোখে মোটা গ্লাসের চশমা। অপর এক তরুণী তাঁর ভিডিও করছেন ও প্রশ্ন করছেন। বলা বাহুল্য যে সেই তরুণী দেশের এই ফুটবলারকে চিনতে পারেন নি। সেই তরুণীর প্রশ্নের উত্তরে জানা যায় যে এই তরুণীর বাড়ি বেহালার শিবরামপুরে। নাম পৌলমি অধিকারী। ভারতের অনুর্ধ-১৬ তে খেলেছেন। গৃহহীনদের বিশ্বকাপে খেলেছেন এমনকি আমেরিকা, জার্মানি ও স্কটল্যান্ড ও গেছেন অথচ কেউ তাঁকে মনে রাখেন নি।


ঘরভর্তি যত্ন করে সাজানো মেডেল ও সার্টিফিকেট। অথচ জীবন সংগ্রামে তিনি সংগ্রামী। তিনি আরো জানান যে, সারাদিনে পেট চালানোর জন্য বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি সংস্থার হয়ে কাজ করেন তিনি। অন্য কাজও করেন পেটের জ্বালায়। তবুও সারাদিনে ৩০০ টাকা রোজগার হয় আবার কোনো কোনোদিন ১৫০ টাকার বেশি পান না। এরই মধ্যে চালাতে হয় তাঁকে নিজের স্নাতক ডিগ্রির (Honours Degree) জন্য পড়াশোনা। তিনি সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েও কোনো সাহায্য পান নি বলে জানান। এমন অবস্থায় যেনো আর কাউকে পড়তে না হয় এই প্রার্থনা করেন। এই কথা বলেই পৌলমিকে কাঁদতে দেখা যায় ভিডিওতে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন,”চাওয়া-পাওয়া বলতে এটুকুই আছে যে আমি যদি নাও পাই(সুযোগ পাই), যে কোনোও মেয়ে খেললেও যেন প্রাপ্য সম্মানটা দেওয়া হোক। সেইসঙ্গে তাঁর পারিবারিক অবস্থা খতিয়ে দেখা উচিত। যে এত ভালো খেলছে সে সারাদিন কি খায়, তাঁর জুতো আছে কিনা দেখতে হবে!”


যদিও গত সোমবার তৃণমূলের মুখ্যপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debansu Bhattacharya) একটি ফেসবুক পোস্ট করে পৌলমি অধিকারীর কন্টাক্ট ডিটেইলস (Contact Details) চান। পরে আবার সেখানেই বলেন যে পেয়ে গেছেন ও কথা হয়েছে পৌলমি অধিকারীর সাথে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *