‘পুত্রর্থে ক্রিয়তে ভার্যা’! শ্লোকটি হয়ত সেভাবে পরিচিত নয়, কিন্তু এই শ্লোকটি যে সত্যতার ভিত, তা কয়েক প্রজন্ম আগে সক্রিয় ভাবে সমাজের বুকে বিদ্যমান থাকলেও, এখন যে নেই তাও বলা যায় না। শ্লোকটির অর্থ হল, কেবল পুত্র লাভের জন্যই নারীর অস্তিত্ব! এমন ‘ভয়ংকর’ কথা, এখন আমাদের মনে বিরক্তির উদ্রেক ঘটালেও, যুগ যুগ ধরে প্রকট ভাবে হোক বা গৌণ ভাবে, এই ‘পরম্পরা’ ই প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসছে । আগেকার দিনে নারীর গন্ডি ছিল ঘর থেকে উঠোন! বাইরের পৃথিবী থাকত তাঁর ঘোমটার আড়ালে। প্রান্তিক ছিল নারীর অবস্থান। কেবল পুরুষের কামনা চরিতার্থ করার ক্ষেত্রে, বা বংশ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ত নারী শরীরের। এখনও ভারতের যেসকল জায়গায় শিক্ষার আলো সেইভাবে পৌঁছয়নি, নারীকে প্রতিনিয়ত সমাজের যাঁতাকলে পিষে যেতে হয় সেখানে। তবুও আগের অবস্থানের তুলনায় নারীরা সাম্প্রতিক কালের বিচারে ছুঁয়েছেন মহাকাশও। পুরুষের সমকক্ষ নয়, বরং নারীরা হয়ে উঠেছেন নিজেদের মত স্বতন্ত্র, নিজেদের মত সমাজে প্রতিষ্ঠিত।
২৬ আগস্ট পালন করা হয় নারীর সমানাধিকার দিবস। এই দিবসের সূত্রপাত ঘটে মার্কিন মুলুকে। যে সময় আমেরিকায় ধনী শ্বেতাঙ্গ পুরুষদেরই ভোটার হিসেবে অধিকার ছিল, সেই সময় বহু নাগরিক আন্দোলনের মধ্যে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আবেদনে সরগরম হয়ে ওঠে মার্কিন মুলুক। শেষমেষ ১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে নারী সমানাধীকার স্বীকৃতি পায়।
শুধু মার্কিন মুলুক নয়, পৃথিবীর সকল দেশের নারীরাই এখন নিজেদের কর্মোলোকে প্রতিভাত হওয়ার জন্য সামিল হয়েছেন। কোনও অংশে পিছিয়ে নেই ভারতও। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ গেমসের পদকজয়ী, সর্বত্রই ভারতীয় নারীদের জয়জয়কার। মিরাবাই চানু থেকে পিভি সিন্ধু, ভারতীয় এই তনয়াদের হাত ধরেই দেশে আসছে স্বর্ণ পদক। সম্প্রতি দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের রাষ্ট্রপতির সিংহাসন দখল করেছেন। তিনি হলেন ভারতের দ্বিতীয়, মহিলা রাষ্ট্রপতি। ২০০৭ সালে প্রতিভা পাতিল দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।