ছোটবেলায় একটি রচনা আমাদের ‘কমন’ আসতই। না এলেও সেই বিষয়বস্তুটি প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যই প্রাসঙ্গিক। বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ? কেউ পক্ষে থাকেন, কেউ বিপক্ষে, কেউ বা নিরপেক্ষ। কারণ বিজ্ঞান নিয়ে বিচার করার দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। সত্যি বলতে, ধৃষ্টতাও বটে। কারণ বিজ্ঞানকে এড়িয়ে জীবনের একটি মুহূর্তও অতিবাহিত করা সম্ভব নয়। কিন্তু তারই কি সূযোগ লাগাচ্ছে বিজ্ঞান? এই নিয়েও তর্ক বিতর্কের শেষ নেই। কিছুদিন আগেই যেমন একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়ে উঠেছে তামাম বিশ্ব। ওড়িয়া সংবাদ মাধ্যমে খবর পড়েছেন এক AI সঞ্চালিকা। নাম, লিসা। কিন্তু কী এই AI?
AI এর পুরো নাম হল আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যেটি কাজে লাগিয়ে ইদানিং কালে জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সমস্ত কিছুই সম্ভব হচ্ছে। ঠিক খবর সঞ্চালনার ক্ষেত্রে যেভাবে সম্ভব হয়েছে সম্প্রতি। ওড়িয়া সংবাদ মাধ্যমে দেখা গেছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য তৈরি এক ‘মডেল’ কে। যন্ত্রের দ্বারাই দৃষ্ট এই নারী একেবারে যেন রক্ত মাংসের মানবী। স্পষ্ট ইংরেজিতে নিজের পরিচয় দিয়ে পড়ে যাচ্ছেন খবর। স্থানীয় ভাষা এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হলেও, আরও অনেক ভাষাই বলতে পারবে এই ‘মডেল’ টি।
একজন মনুষ্য নারীর মতই তাঁর পরনে ছিল শাড়ি। উড়িষ্যার ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ি পরিধান করেছিলেন লিসা। তাঁর সঞ্চালনায় তাক লেগে গেছে গোটা বিশ্বের! প্রযুক্তি কী না করতে পারে!
কিন্তু এই উন্নয়ন কি সত্যিই উৎকৃষ্ট? সেই নিয়েই বিরূপ মত পোষণ করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মতে, বিজ্ঞান এইভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে খেটে খাওয়া মানুষ পড়বেন মহা সংকটে। মানুষের কাজ যদি এখন যন্ত্রই করে দিতে পারে, তাহলে খুব শীঘ্রই যে অনেক মানুষ কাজ হারাবেন, সে বলতে বাকি রাখে না।
লিসার উপস্থাপনায় সাধারণ মানুষ মজা পেলেও, কপালে ভাঁজ পড়েছে উড়িষ্যাসহ বিভিন্ন স্থানের সঞ্চালকদের। ওড়িয়া সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন, লিসা এবার থেকে বেশ কিছু অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে। কিন্তু আগে যাঁরা এই দায়িত্বে থাকতেন, তাঁদের কী হবে? সেই নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। লিসার মত আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে AI মডেলদের দাপটে চিন্তার মেঘ ঘনিয়েছে জনগণের মধ্যে। বিজ্ঞানের জয়গানের সঙ্গে, বিজ্ঞানের অধিক, তথা অপপ্রয়োগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের একাংশ।