পৃথিবী যত আধুনিকিতার দিকে এগোচ্ছে তত মানুষের শরীরে রোগ ব্যাধির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা প্রায়শই বিভিন্ন রোগে ভোগেন। তার মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্তের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যান্সারেরও বিভিন্ন ভাগ রয়েছে, যার মধ্যে আজকাল বেশিরভাগ মানুষ কোলন ক্যান্সারে (Cancer) আক্রান্ত হচ্ছেন। আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের এই রোগ সম্পর্কে জানাবো। আজকাল অনেকেই পেট ব্যাথায় ভোগেন কিংবা মলত্যাগের সময় তাদের ব্যাথা পেতে হয়। জানেন কি এমন লক্ষণ আপনার শরীরে ঝুঁকি আনতে পারে? দেখা দিতে পারে কোলন ক্যান্সারের (Colon Cancer) মতো মরণব্যাধি রোগ। তাহলে চলুন এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
কোলন ক্যান্সার কী?
সাধারণত মলাশয়ের মিউকোসাল এপিথেলিয়ামের টিউমারটি যখন ম্যালিগন্যান্ট টিউমারে রূপান্তরিত হয়ে কোলন ক্যান্সারের (Colon Cancer) সৃষ্টি করে। মলাশয় এবং মলদ্বারের সংযোগস্থানে এই রোগটি দেখা দেয়। এটিকে অনেকে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারও (Grastric Cancer) বলে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোলন ক্যান্সার পেটের আস্তরণে তৈরি হয় এবং ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে তা দ্রুত লিভার এবং অগ্ন্যাশয়ের মতো কাছাকাছি অঙ্গগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। ৬৫ বা তার বেশি বয়সী রোগীদের কোলন ক্যান্সার (Colon Cancer) হওয়ার সম্ভবনা বেশি। কোলন ক্যান্সারের প্রায় ১.৫ শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্ণয় করা হয়। ৪০ বছর বা তার কম বয়সী রোগীদের এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে ১৫%। পুরুষ ও মহিলার কোলন ক্যান্সার হওয়ার আনুপাতিক হার হলো ২:১।
কিভাবে শরীরে কোলন ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়
পরিবেশ ও জিনগত কারণে এই ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত মাংস খাওয়া কিংবা ধূমপান ও মদ্যপান এই ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে মোটা স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদেররোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে যে সমস্ত মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই রোগটি প্রধানত পাকস্থলীর কোষের ডিএনএ-তে জেনেটিক (DNA Genetic) পরিবর্তন হয়ে টিউমারে রূপান্তরিত হয়, যা পার্শ্ববর্তী সুস্থ কোষগুলিতেও ছড়িয়ে যায় এবং কোলন ক্যান্সারের (Colon Cancer) বৃদ্ধি ঘটায়।
কোন কোন উপসর্গ দেখে কোলন ক্যান্সারের চিনবেন
১) মলত্যাগের সময় মলের সঙ্গে কালচে রক্তপাত, অতিরিক্ত মল নির্গত হওয়া এবং মলদ্বারে ঘা কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ।
২) কোলন ক্যান্সার হলে পেট ব্যথা অনুভূত হয় এবং হজম ও অরুচি ভাব দেখা দেয়।
৩) লিভার জনিত সমস্যা যেমন জন্ডিস, লিভারে জল জমা হওয়া ইত্যাদি কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ।
৪) আচমকা বমি বমি ভাব, গা গুলিয়ে ওঠা এবং ওজন অনেকটা কমে যাওয়া কোলন ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ।
রোগ নিরামিয়ে আপনাকে সচেতন হতে হবে
ক্যান্সার কঠিন রোগ হলেও বর্তমানে এই রোগ সরিয়ে তোলার অনেক উপায় বের হয়েছে। তবে এর জন্য প্রথমেই রোগীকে সচেতন হতে হবে। উপরিউক্ত লক্ষণ গুলি দেখা দিলে, অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রথম দিকে এই রোগ নির্ণয় করতে পারলে, তা সারিয়ে তোলা অনেক সহজ হয়। এর সাথে আপনাকে খাদ্যাভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। বিভিন্ন মাংস, আঁশ যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যদি আপনার ধুমপান এবং মদ্যপানের নেশা থাকে, তবে তা পুরোপুরি কমিয়ে দিতে হবে।