“যত বড়ো হও, তুমি তো মৃত্যুর চেয়ে বড়ো নও…আমি মৃত্যু-চেয়ে বড়ো… এই শেষ কথা বলে যাব আমি চলে।” এমন ‘মৃত্যুঞ্জয়’ কজন হতে পারেন বলুন তো? পারেন না… তাই তো তিনি আমাদের প্রাণের আরাধ্য! তিনি রবীন্দ্রনাথ! যাঁর মৃত্যু নেই! তাঁর জীবন শারীরিক ভাবে স্তব্ধ হলেও, তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনও বিচ্ছেদ নেই! তিনি চিরন্তন! তবুও তাঁর শারীরিক ভাবে পার্থিব মায়া ত্যাগের দিন, আমাদের কাছে বিষাদের! কিন্তু তিনিই তো এক মস্ত বড় জীবনের পূজারী! বারবার জীবনমুখী প্রবাহে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছেন। মহানন্দময় মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করতে চেয়েছেন। বলেছেন, “আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে॥” শেষের মাঝেই আনন্দ খুঁজে পাওয়া..! ভাবা যায়! তাই তাঁর জীবনের শেষ দিন ক্যালেন্ডারের হিসেবে প্রতি বছর আসলেও, বিষাদের সঙ্গেই আমরা মেতে উঠি জীবনের ছন্দে। কারণ তিনি তাঁর ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্যের মতই! শেষ হয়েও কিছুই শেষ নয় তাঁর! তিনি অসীম।
তাঁকে স্মরণ করতে আগামী ২২ শ্রাবণ, ৮ অগাস্ট জোড়া সাঁকো ঠাকুরবাড়িতে হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। তাঁর যাবতীয় সকল সৃষ্টি, যাপন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আবর্তিত হবে এই অনুষ্ঠান। সঙ্গে থাকবে নৈশ ভোজের আয়োজনও। ৮ অগস্ট সন্ধ্যা সাতটা থেকে সূচিত হবে এই অনুষ্ঠান।
এছাড়াও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে আগামী ৮ অগাস্ট থেকে ১৩ অগাস্ট। গানে এবং কবিতায় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে কবিগুরুকে। প্রতিদিন বিকেল ৫ টা থেকে শুরু হবে এই অনুষ্ঠান। কোনও একটি জায়গায় না, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দিন গুণী শিল্পীদের দ্বারা বাংলার মানুষ এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে পারবেন। রবীন্দ্র সদন, একতারা মুক্তমঞ্চ, শিশির মঞ্চ, বাংলা একাডেমি সভাগৃহে বিশ্বকবির স্মরণে সংঘটিত হবে অনুষ্ঠান সমুহ। এছাড়াও ‘স্মৃতিকথায় রবি-কথা’ নামের একটি প্রদর্শনীও প্রদর্শিত হবে গগণেন্দ্র শিল্প প্রদর্শনশালায়। এই অনুষ্ঠানের সময়সূচি হল প্রতিদিন বিকেল ৪ টে থেকে রাত্রি নয়টা।
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুদিনকে কেন্দ্র করে আমরা বাঙালি মেতে উঠি রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির আনন্দ নিয়ে। তাই বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষ্যে গায়িকা জয়তী চক্রবর্তীর (Jayati Chakraborty) পরিবেশনায় আগামী ২০ আগস্ট থাকবে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি কলা মন্দিরে সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ সূচিত হবে।