সারা বিশ্বকে এক সুতোয় বাঁধলেন আটলী কুমার। দক্ষিণী এই পরিচালকের ঝুলিতে রয়েছে মাত্র কয়েকটি ছবি। সংখ্যায় স্বল্প হলেও, পরিচালনায় বেশ হাত পাকিয়ে নিয়েছেন ‘জওয়ান’ ছবির পরিচালক। নাহলে কি আর বলিউডের ‘মিস্টার ইন্ড্রাস্ট্রি’র ছবি পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে পড়ে! এককালে ভক্ত হিসেবে শাহরুখের সঙ্গে এক ফ্রেমে বন্দি হন আটলী। আজ তাঁর দীর্ঘ, এবং কঠোর লড়াই তাঁকে কিং খানের ছবির নির্মাতার আসনে স্থান দিয়েছে। সেই আটলীর হাত ধরেই বলিউডের ‘বাদশা’ করলেন বিশ্বজয়! যদিও এটি তাঁর কাছে নতুন নয়। কিন্তু ‘কামব্যাক’ ছবি হিসেবে ‘জওয়ান’ এখন বিশ্বের কাছে জোর চর্চার কেন্দ্র। ভারত, আমেরিকাসহ পৃথিবীর বহু প্রান্তের দর্শক ‘জওয়ান’ জ্বরে কাবু। কী এমন জাদুমন্ত্র প্রয়োগ করলেন আটলী? শাহরুখের সঙ্গে যেখানে তাঁর প্রথম ছবিতেই করলেন ‘চমৎকার’!
আসলে শাহরুখের মত ‘বাজিগর’ কে ছবিতে কাস্ট করা, যে সে ব্যাপার নয়। তার জন্য নজর রাখতে হয় বিভিন্ন দিকে। আটলী কুমারও পরিচালক হিসেবে যথার্থ ভাবে সেইসব দিকে আলোকপাত করেন। প্রথমেই শাহরুখের উপস্থিতিতে তিনি চমক রাখেন। একটি ভূমিকায় নয়, দ্বৈত চরিত্রে এই ছবিতে শাহরুখকে প্রতিষ্ঠিত করেন পরিচালক। বলা বাহুল্য, এই কারণের জন্যই কিং খানের ‘ফ্যান’ মহল রীতিমত উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। ছবিতে একটি শাহরুখকে দেখাই যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার মত সমান শাহরুখ-ভক্তদের কাছে, সেখানে দু দুটি শাহরুখ! এই চমকে যারপরনাই আলোড়ন সৃষ্টি হয় সিনে জগতে।
শাহরুখের চরিত্র নিয়ে আরও কিছু দিক বলতে হয়। এই ছবির টিজারটিও হয় বেশ ‘ট্রিকি’। অভিনেতার উপস্থিতি অনেকের কাছেই খল চরিত্র হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু ছবিটিতে সেই ধারণা সম্পূর্ন ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়। পরিচালক সকলের প্রিয় ‘বাদশা’ কে নায়ক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করেন। শাহরুখের মুখে বেশ অনেকগুলি সংলাপ সকলের মন ছুঁয়ে যায়।
এই ছবিতে বলিউডের ‘রোমান্স কিং’ এর বিপরীতে দেখা যায় দক্ষিণী অভিনেত্রী নয়নতারাকে। দর্শক প্রথম থেকেই এই নতুন জুটির রসায়নে মজেছিলেন। ছবিতে তাঁদের দেখে, এবং কিছু মিষ্টি গানে তাঁদের প্রেমকে প্রাণ পেতে দেখে বেশ উপভোগ করেন তাঁরা।
নায়ক নায়িকা বাদে আর একজনের উপস্থিতি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আটলীকে সেখানেও প্রশংসা জানাতে হয়। এই ছবিতে খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিজয় সেতুপতি। দক্ষিণী ছবির অন্যতম ভিত তিনি। শাহরুখের মত এতদিন মানুষ তাঁকে পেয়েছেন ‘জেন্টেলম্যান’ অবতারে। কিন্তু এই ছবিতে তিনি নিজের চেনা ছক থেকে বেরিয়ে হয়ে উঠেছেন ধূসর। তাই তাঁর সাবলীল অভিনয় ভীষণ পরিমাণে দর্শকদের তাক লাগিয়েছে। এই চরিত্রে তাঁকে ছাড়া যেন অন্য কাউকে ভাবাই যেত না!
মূল চরিত্রাভিনেতারা ছাড়াও বিশেষ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে দীপিকা পাডুকোন এবং সঞ্জয় দত্তের। অল্প সময় হলেও, ছবিতে প্রাণ নিবেদন করে গেছেন তাঁরা।