সেলুলয়েডে নেতাজী যাপন! ২৩ জানুয়ারির স্মরণে যে ছবিগুলি দেখা আবশ্যক, রইল তালিকা

শতবর্ষ পেরিয়েছে দুই যুগের কয়েক বছর আগেই। অর্থাৎ, প্রায় একশো পঁচিশ বছর আগে ভারত মায়ের কোলে আবির্ভূত হয়েছিলেন, বীর সন্তান, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। আজ, ২৩ জানুয়ারি, তাঁর একশো ছাব্বিশ বছরের জন্মবার্ষিকী। তিনি, ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের ঈশ্বর। তাঁর, মৃত্যু নেই। তিনি অজর, অমর, অক্ষয়। স্ফুলিঙ্গের মত আবির্ভূত হয়ে, যে দেশকে স্বাধীন করার যে ক্ষণকালের ছন্দে তিনি মত্ত ছিলেন, তা অবর্ণনীয়। তাঁর জন্য স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ সম্ভব হলেও, তাঁকে মানুষ বেশিদিন পাননি। আক্ষরিক অর্থেই, স্ফুলিঙ্গের মত উদয় হয়ে, নিজের কার্যসিদ্ধি করেই তাঁর অন্তর্ধান হয়। দেশবাসীকে সহস্র বন্ধন মাঝে মুক্তির স্বাদ লাভ করাতে ব্রতী হলেও, স্বাধীনতার পরের আনন্দ আয়োজনে তিনি থেকে গেলেন অন্তরালে।

এই যুগপুরুষ চিরকালই আলোচনার কেন্দ্রে অবস্থান করেন।
পরম বীর এই মুক্তিযোদ্ধার সংগ্রামী পথ চলা, ফুটে উঠেছে রুপোলি পর্দাতেও। সেই কারণে, আজকে বিশেষ দিনে, বিশেষ পর্বে রইল, সেলুলয়েডে নেতাজী যাপন।

সমাধি:
ভারত স্বাধীন হওয়ার বছর তিন পাড় হয়েছে। সাল তখন ১৯৫০। রমেশ সায়গল নির্মিত ‘সমাধি’ ছবিটিতে অভিনয় করেন কিনবদন্তী গায়ক কিশোর কুমারের সহোদর অশোক কুমার। আদ্য প্রান্ত নেতাজীর আত্মজীবনী কেন্দ্রিক না হলেও, আজাদ হিন্দ ফৌজের আদর্শের মত নানারকম রাজনৈতিক দিক ফুটে উঠেছে এই ছবিতে। সঙ্গে ব্যাক্তিগত সম্পর্ক এবং দেশপ্রেম ছবিটিকে বেশ পুষ্ট করে তুলেছে।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু :
১৯৬৬ সালের এই ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন হেমেন গুপ্ত। এটি আদ্য প্রান্ত নেতাজীর জীবনকেন্দ্রিক। শৈশব থেকে কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে স্বাধীন দেশের প্রাক্কালে রক্তের বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠা, ইত্যাদি নানা মুহুর্ত দিয়ে বুনন করা হয়েছিল ছবির প্রেক্ষাপট। নেতাজীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভি ভট্টাচার্য।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস: দ্য ফরগটেন হিরো
শ্যাম বেনেগাল ২০০৪ সালে বড় পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন নেতাজীর সংগ্রামী জীবনী। নেতাজীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শচীন খেদেকর। নেতাজীর জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ বর্ণিত হয়েছিল রুপোলি ক্যানভাসে।

রঙ্গুন’ এবং ‘রাগ’ এই দুটি ছবির কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতেই হবে। সেই হিসেবে সরাসরি নেতাজীর জীবনী অঙ্কিত না হলেও, আজাদ হিন্দ ফৌজ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ফুটে উঠেছে দর্শকদের চোখের সামনে।

আমি সুভাষ বলছি:
মহেশ মঞ্জরেকর দ্বারা নির্মিত এই ছবির নাম শুনে যেন মনে হয়, স্বয়ং নেতাজী কিছু বলতে চেয়েছেন। কিন্তু এই ছবি কোনও মতেই তাঁর আত্মজীবনী নয়। অথবা নেতাজীর জীবনের কোনও অধ্যায়ের অংশ নিয়েও চিত্রিত নয়। আসলে ছবির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করা মিঠুন চক্রবর্তীর চরিত্রটির আদর্শ ছিলেন নেতাজী। তিনি যেন অলক্ষ্যে থেকে মিঠুন অভিনীত চরিত্রটিকে নিয়ন্ত্রন করতেন, এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার মন্ত্রে উজ্জীবিত করতেন। আদর্শ হিসেবে নেতাজীকে প্রতিষ্ঠিত করে, তাঁর পথে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও, জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়বস্তু নিয়ে আবর্তিত হয়েছিল এই ছবি।

গুমনামি:
বাংলা সেলুলয়েডে নেতাজীকে নিয়ে নির্মিত অন্যতম চর্চিত ছবি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘গুমনামি’ ছবি। সৃজিত মুখোপাধ্যায় ছবিটি, নেতাজীর জীবনের সবচেয়ে চর্চিত দিকটি নিয়ে তৈরি করেছিলেন। নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্যের ওপর কেন্দ্র করে নির্মিত এই ছবি থেকে অনেক অজানা রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার সন্ধান পাওয়া যায়। বলা বাহুল্য, শুধু ছবিতে নয়, বাস্তবেই অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনীত চরিত্রটির ভুমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

বোস ডেড অর আলাইভ:
নেতাজীর অন্তর্ধান নিয়ে প্রশ্ন সর্বত্র। প্রশ্নের চেয়েও বেশি রহস্য। বড় পর্দায় নয়, বরং ওটিটি মাধ্যমেও এই নিয়ে সরব হয়েছেন পরিচালকেরা। রাজকুমার রাও অভিনীত ‘বোস ডেড অর আলাইভ’ উপস্থাপনাটি দর্শকদের মধ্যে বেশ অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল।

দ্য ফরগটেন আর্মী :
কবির খানের পরিচালনায় ‘দ্য ফরগটেন আর্মী’ ছবিটি হল আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরির ইতিহাস নিয়েও। এটিও একটি ওয়েব সিরিজ। অভিনয় করেছেন ভিকি কৌশলের ভাই সানি কৌশল।

Netaji Subhash Chandra Bose
Scroll to Top