তিনি আক্ষরিক অর্থেই রূপে লক্ষ্মী এবং গুণে সরস্বতী। অভিনয় দিয়ে দর্শককে মুগ্ধ করার সঙ্গে, তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতাও কুর্নিশযোগ্য। ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty), টেলিভিশন জগতে আজ থেকে দশ বারো বছর বয়সে যাঁর আত্ম প্রকাশ ঘটেছিল “ওগো বধূ সুন্দরী” হিসেবে। দুষ্টু মিষ্টি প্রাণবন্ত ‘ললিতা’ হয়ে উঠেছিলেন প্রত্যেক বাঙালি ঘরের আদরীনি। এরপর কেটে গেছে অনেকগুলি বছর। পর্দায় সেভাবে ঋতাভরীকে দেখা না গেলেও, তাঁর কর্মের জন্য তিনি থাকতেন আলোচনার কেন্দ্রে। মূক ও বধির শিশুদের জন্য একটি বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন অভিনেত্রী। প্রায়শই ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে তাঁর আদুরে মুহূর্তের সাক্ষী হন নেট দুনিয়া।

সম্প্রতি মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। ঋতাভরীর বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিশুও ছিল এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। অভিনেত্রীর এই বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা প্রদানের অনুমতি পাওয়া না গেলেও, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সেই সকল শিক্ষার্থী সেই বিদ্যালয়ে পড়ে, নবম এবং দশম শ্রেণীতে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যান। যেখানে আর পাঁচজন “সাধারণ” শিশুও পঠন পাঠন করে থাকে। সকলের সঙ্গে তাঁরাও তাঁদের চেষ্টায় মাধ্যমিকে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাই, ‘অভিভাবক’ এবং শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, ঋতাভরীর কাছে, সত্যিই আজ গর্বের দিন।

আদরের ছাত্র ছাত্রছাত্রীদের এই সফলতায় আবেগপ্রবণ অভিনেত্রী। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন তাঁর অনুভব। তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমাদের খুব আনন্দের দিন। গৌরবের দিন। পরমা, অঙ্কনা, অভিষেক, অর্পন,রূপঙ্কর, দীপ ও তাপসী, খুব ভালোভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এই ছেলেমেয়েরা আমাদের Ideal School for the Deaf ( সল্টলেক) এর ছাত্রছাত্রী। ক্লাস এইটের পর ওদের অন্য স্কুলে যেতে হয়েছিল, যেখানে আর পাঁচজন স্বাভাবিক ছেলেমেয়েরা যায়। কারণ, আমাদের স্কুলটা মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানোর অনুমোদন পায়নি।’ অভিনেত্রী আরও যোগ করেছেন, ‘দুটো বছর ওরা সেই সব স্বাভাবিক স্কুলের পাঠ নিয়েছে, যেখানে মূক বধিরদের জন্য আলাদা কোন ব্যবস্থা নেই। এ সত্বেও ওরা জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, সসম্মানে। তাই, ওদের অভিভাবক ও আপনজন হিসেবে আমি আরো বেশি আনন্দিত ও গর্বিত। আমি সকলের কাছে ওদের জন্য শুভেচ্ছা ও স্নেহাশীর্বাদ চাই।’
