কলকাতার অনুরূপ এবং সাগরিকা ভট্টাচার্য। দুই সন্তান অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্যকে নিয়ে নানা রঙের দিন যাপন করছেন সুদূর নরওয়েতে। অনুরূপের বদলিই, তাঁদের সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারের ঠিকানা হয়ে ওঠে। হেসে খেলে বেশ কাটছিল এই বঙ্গ পরিবারের জীবন। কিন্তু আকস্মিক নেমে আসা বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে যায় এই ছোট্ট হাসি খুশি পরিবারটি। নরওয়ে সরকার প্রদত্ত কিছু পর্যবেক্ষণকারী তাঁদের বাড়ি এসে দেখেন, বাচ্চারা নাকি ঠিক মত মানুষ হচ্ছে না। অভাব রয়েছে সঠিক অভিভাবকত্বের। উপায়? পরিবারের থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখা। ১৮ বছর বয়স অবধি মা বাবার থেকে দূরে থাকতে হবে একরত্তি দুধের শিশুগুলিকে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে, ফিরিয়ে দেওয়া হবে পরিবারের কাছে। আসলে এটিও এক প্রকার ব্যবসা। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মিসেস চ্যাটার্জী vs নরওয়ে’ (Mrs Chatterjee Vs Norway) ছবির ট্রেলারের সঙ্গে আলোচ্য ঘটনাটির বেশ মিল। আসলে ছবিটিতে অনুরূপ এবং সাগরিকার জীবনের প্রতিই আলোকপাত করা হয়েছে। মূল ভূমিকায় রয়েছেন রানী মুখার্জী (Rani Mukherji) এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)।
![](http://techtalkey.com/wp-content/uploads/2023/02/img-20230223-wa00088894648385624096946-1.jpg)
রানী মুখার্জীর চরিত্রটির নাম হয়েছে ছবিতে, দেবিকা চ্যাটার্জী। স্বামী এবং সন্তান শুভ এবং সূচীকে নিয়ে তাঁর ভরাট সংসার নরওয়েতে। কিন্তু নরওয়ে সরকার প্রশ্ন তোলেন তাঁর অভিভাবকত্বের বিরুদ্ধে। সন্তানদের হাতে করে খাইয়ে দেওয়া থেকে একসঙ্গে নিয়ে শোওয়া, এমনকি কপালে কালো টিকার মত হিন্দু সংস্কৃতি নরওয়ের ‘আধুনিক’ সংস্কৃতির কাছে যথাযথ শিক্ষা প্রদানের আয়তায় পড়ে না। তাঁরা ভাবে, চ্যাটার্জী দম্পতি তাঁদের সন্তানদের মানুষ করতে অক্ষম। তাই, সন্তানদের তাঁদের থেকে দূরে রাখাই একান্ত উপায়। বিচ্ছেদ ঘটানো হয় ছোট্ট দুই শিশুকে তাঁদের পরিবারের থেকে। দেবিকার হিন্দু সংস্কৃতি কেন্দ্রিক মাতৃস্নেহকে দাগানো হয় ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এর পরিচয়ে। শুরু হয় মাতৃত্বকে সম্বল করে দেবিকার লড়াই। এমনকী নরওয়ের নাগরিকত্ব অর্জনের পিপাসু স্বামীও দাঁড়ান না স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ে।
![](http://techtalkey.com/wp-content/uploads/2023/02/img-20230223-wa00098276986132018442559-1.jpg)
দেবিকা দ্বারস্থ হন ভারত এবং নরওয়ে আদলতের। রুখে দাঁড়ান বাচ্চাদেরকে অস্ত্র করে মা বাবার থেকে টাকা নিয়ে এমন কুরুচিকর ব্যবসা করার বিরুদ্ধে। কিন্তু এই লড়াইয়ের পরিণতি কী, তার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই ট্রেলার সাড়া ফেলে দিয়েছে জনমানসের মধ্যে। কারণ এটি সত্য ঘটনা অবলম্বনেই নির্মিত। বাঙালিদের জন্য বিশেষ চমক, তাঁদের প্রিয় অনির্বাণ রয়েছেন এই ছবিতে। বেশ কিছু বছর পর রানীকেও বড় পর্দায় পাওয়া যেতে চলেছে। একেবারে ছাপোষা বাঙালি গৃহবধূর চরিত্রে তাঁর উপস্থিতি, একেবারে যথাযথ। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অসীমা চিববর।
![](http://techtalkey.com/wp-content/uploads/2023/02/img-20230223-wa00074625335494103607199-1-1024x461.jpg)