“আমাদের আবার দেখা হবে..”দেখা হয়নি বাবার সঙ্গে, স্মৃতিচারণায় আবেগপ্রবণ মিঠুন চক্রবর্তী

গত ১৮ জুন ছিল আন্তর্জাতিক পিতৃ দিবস। সারা দেশ মেতে ছিল এই একটি বিশেষ দিন বাবার জন্য বিশেষ ভাবে উৎসর্গ করতে। জি বাংলার বিখ্যাত রিয়ালিটি শো, ড্যান্স বাংলা ড্যান্স (Dance Bangla Dance) জুড়েও সেদিন ছিল পিতৃ দিবসের (Father’s Day) আমেজ। সবার মত বাবাদের সঙ্গে স্মৃতি ভাগ করে নিচ্ছিলেন “মহাগুরু” মিঠুন চক্রবর্তীও (Mithun Chakraborty)। কিন্তু বাবার সঙ্গে তাঁর মুহূর্ত যাপনের পাতা উল্টাতে গিয়েই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন অভিনেতা।

১৯৭৬ সালে “মৃগয়া” (Mrigayaa) ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপোলি জগতে হাতে খড়ি হয় মিঠুন চক্রবর্তীর। তাঁর এই সফর, একেবারেই সুগম ছিল না। হাজার হাজার প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই তবে আজকের মিঠুন চক্রবর্তী হয়ে উঠেছেন তিনি। শৈশবে একটি মাত্র ঘরেই বাবা মা এবং ভাই বোনদের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে কেটেছে তাঁর দিন। অভাবের সংসারে কিছু করতে না পারার জন্য, বাবা তাঁকে করেন ত্যাজ্যপুত্র। মিঠুনের লড়াই আরও জোর কদমে শুরু হয় তারপর থেকে। নিজের দক্ষতায় মন জয় করতে থাকেন বাঙালি তথা সকল ভারতীয় দর্শকের। নিজের উপার্জনে বাড়িও কেনেন তিনি। সেই বাড়িতে নিয়ে আসেন তাঁর মা বাবাকে। ভাড়া বাড়ি নয়, বরং ছেলের নিজের উপার্জনে এত বড় বাড়িতে ঢুকে অবাক বিস্ময়ে কেঁদে ফেলেন তাঁর বাবা। ড্যান্স বাংলা ড্যান্সের মঞ্চে এই ঘটনা বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে আসে মিঠুন চক্রবর্তীর চোখও।

নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মিঠুন আবার বলতে শুরু করেন, তাঁর বাবা ঠিক মৃত্যুর চারদিন আগে মিঠুনকে ফোন করে জানান, মিঠুনের জন্য তিনি গর্বিত। যে কথা এতদিন বলা হয়নি সন্তানকে, সেদিন তিনি বলেন। বলেন, তিনিও আর পাঁচজন বাবার মতই তাঁর সন্তান গৌড়কে (মিঠুন চক্রবর্তীর পিতৃদত্ত নাম) ভালোবাসেন। এবং তাঁদের আবার দেখা হবে। কিন্তু বেঁচে থাকতে বাবার সঙ্গে আর দেখা হয়নি মহাগুরুর। সেই ফোনেই তাঁর সঙ্গে তাঁর বাবার শেষ কথা। মিঠুনের এই আবেগী স্মৃতিচারণায় ভারী হয়ে ওঠে উপস্থিত সকলের মন। মিঠুন নিজেও বলতে বলতে থেমে যান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক, অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা (Ankush Hazra) মিঠুনকে আলিঙ্গন করে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যত হন।

Scroll to Top