ভারতেও খুব সহজেই গড়ে উঠতে পারে পরিবেশ-বান্ধব জলবায়ু, রইল উপদেশ

ছোটবেলায় বরাবর একটি রচনা আমরা ‘কমোন’ পেতামই। তা হল ‘পরিবেশ দূষণ’। খাতায় মুখস্ত বিদ্যে দিয়ে মাত করে নম্বর পেয়ে গেলেও, বাস্তবে আমরা পরিবেশের প্রতি সচেতন কিন্তু কখনই হয়নি। যার ফলে দিন দিন বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global Warming) গাঢ় আস্তরণ আমাদের সুস্থ পৃথিবীকে আবৃত করে ফেলছে। ফলে তাপমাত্রার বৃদ্ধির দরুন দেখা দিচ্ছে একাধিক প্রাকৃতিক দূর্যোগ। কিন্তু তবুও আমাদের বাঁচতে হবে, এবং সুস্থভাবে বাঁচতে হবে। পরিবেশকে দূষণ-মুক্ত রাখার জন্য মেনে চলতে হবে বেশ কটি পরামর্শ। কিভাবে আপনিও একটি দূষণ-মুক্ত, সুস্থ এবং সতেজ ভারত তথা পৃথিবীর নাগরিক হবে সেই নিয়েই আপনাদের সাহায্য করল পরিদর্শক।

  • যানবাহনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ –

সম্প্রতি জাতিসংঘে ভারতের জলবায়ু সম্পর্কিত গতিবিধি পেশ করার দরুন উঠে এসেছে যে কতটা উচ্চ পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হয়ে থাকে এই দেশ জুড়ে। যার ফলে তা গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করার এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই কারণে ভারতকে অবশ্যই একটি সুস্থ, পরিবেশ-বান্ধব জলবায়ু (Eco-friendly Climate) গড়ে তুলতে হবে। কি কি উপায়ে তা সম্ভব, রইল বিশদে।

কাছাকাছি কোথাও গেলে, পায়ে হেঁটে অথবা সাইকেল বা রিক্সায় যাওয়ার অভ্যাস করুন। পেট্রোল (Petrol) বা ডিজেলচালিত (Diesel) যানবাহন যথাসাধ্য এড়িয়ে চলুন। কারণ সেই সকল যান থেকে নির্গত ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। দূরে কোথাও গেলেও বিমানের বদলে ট্রেনে যাওয়াকেই বেছে নিন।

  • শক্তির অপচয় রোধ –
    এসি বা রেফ্রিজারেটর আমাদের সাম্প্রতিক জীবনের ভীষণ গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ। এগুলি ছাড়া চলে না বললেই চলে। কিন্তু এগুলি থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (Chlorofluorocarbon) বাতাসে মিশে বায়ু দূষণ (Air Pollution) ঘটায়। আবার এ কথাও সত্য, এই দূষিত গ্যাসগুলির জন্যই বিশ্ব উষ্ণায়নে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বাতানুকুল যন্ত্রগুলিরও দরকার পড়ছে। এসি যদি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে বেশি তাপমাত্রাতেই (অন্তত ২৫°) ঘরকে শীতল করার ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া শীতকালে হিটার ব্যবহার করলে, তার তাপমাত্রা কমিয়েই করবেন। দু ক্ষেত্রেই বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে যেন বেশি তফাৎ না ঘটে সেই দিকে নজর রাখতে হবে, কারণ বেশি তফাৎ হলেই তাপমাত্রা ভারসাম্য হারাবে এবং পরিবেশের জন্য বিপদ ডেকে আনবে।
  • পুনঃব্যবহারযোগ্য জিনিসের প্রয়োগ :

প্ল্যাস্টিক বা পলিথিনজাতীয় দ্রব্য একেবারেই বর্জন করুন। কারণ এগুলি নষ্ট তো হয়েই না, বরং একাধিকবার ব্যবহার করা যায় না, এবং পরিবেশের প্রভূত ক্ষতি করে। যেসকল জিনিস একবার ব্যবহার করার পরেও অক্ষত থাকে, সেই সকল জিনিসকে সংরক্ষণ করুন। এমনকি বৃষ্টির জলও সংরক্ষণ এবং পুনঃব্যবহার করা উচিত।

অন্যদেরকেও এই বিষয়ে সতর্ক করার সঙ্গে, বাড়িতেও মরশুমী তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে রাখুন। যেমন গাছ লাগানো, শীতকালে ঠান্ডা প্রতিরোধের জন্য তাপমাত্রা রোধক ছাউনির ব্যবস্থা, এমনকি জল গরম করতে সৌরশক্তিতে চালিত সোলার হিটার ব্যবহার করতে পারেন। দূষিত গ্যাস নির্গমন হয় এমন যন্ত্র, জীবাশ্ম জ্বালানি প্রভৃতিকে যথা সম্ভব এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

Scroll to Top