প্লাস্টিক মুক্ত দেশ গড়তে নতুন আবিষ্কার বাঙালি বিজ্ঞানীদের!

বর্তমানে সারা পৃথিবীর অন্যতম একটি সমস্যা হলো প্লাস্টিক। মানুষের তৈরি জিনিস যে মানুষকেই বিপদের মধ্যে ফেলে দিতে, পারে তার অন্যতম উদাহরণ এই জিনিসটি। প্লাস্টিক এমনই একটি জিনিস যা ৫০০ থেকে হাজার বছর অব্দি একই রকম অবিকৃত থেকে যায় এবং মাটির সাথে বা পরিবেশের সাথে মিশে যায় না। আবার জ্বালিয়ে দিলে যে ধোয়া উৎপন্ন হয়, তার দরুণ মারাত্মক হারে পরিবেশ দূষণ হতে থাকে।

সম্প্রতি প্লাস্টিক মুক্ত দেশ গড়ার জন্য গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন একটি গবেষণায় নেতৃত্বে রয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানীরা। আছেন বিজ্ঞানী ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী l, প্রীতিরঞ্জন মন্ডল, সূর্য সারথি বসু, কৌশিক চট্টোপাধ্যায় এবং শুভাশিস মাইতি।

প্লাস্টিক জিনিসটি পরিবেশের জন্য অপকারী হলেও দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের অনেক ব্যবহার রয়েছে। এজন্য প্লাস্টিকের বিকল্প যদি এমন কিছু তৈরি করা যায় যা প্লাস্টিকের মতো পরিবেশ দূষণ করতে পারেনা, তাহলে তা পরিবেশের জন্য এবং মানুষের জন্য খুবই উপকারী একটি আবিষ্কার হতে পারে।

সম্প্রতি এমনি একটি বায়ো পলিমার আবিষ্কার করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স ব্যাঙ্গালোর এর পাঁচ বাঙালি বিজ্ঞানী। তাঁদের তৈরি ‘পলিইউরোথিন’ জীবাণুবিয়োজ্য, টেকসই, সহজলভ্য ও একেবারেই ব্যয়সাপেক্ষ নয়। এবং এই প্লাস্টিককে পরিবেশের জন্য একেবারেই ক্ষতিকারক নয়। পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে এই ধরনের প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য উপকারী।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন নতুন এই পলি ইউরোথিন তৈরি হয়েছে রেড়ির তেল, ডাইআইসোসায়ানেট ও ধানের গোড়া দিয়ে। এই তেলটি খাবার তেল না হলেও ভারতে এই তেলটি প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয়। পাশাপাশি ধানের গোড়া প্রায় সমস্ত ধানের জমিতেই পাওয়া যায় যা ধান কেটে নেবার পর মাঠেই পড়ে থাকে। এগুলি পুড়িয়ে ফেললে বায়ু দূষণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।

এই প্লাস্টিক জীবাণু বিয়োজ্য কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা এই প্লাস্টিক থেকে মাটির তলায় চাপা দিয়ে রেখেছিলেন এবং দেখা গেছে যে মাত্র তিন চার মাসের মধ্যে প্রায় ৩৫% প্লাস্টিক পচে গিয়েছে।

এই আবিষ্কার যদি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে খুব শীঘ্রই ভারত দূষণকারী প্লাস্টিক মুক্ত হতে পারবে এবং নতুন এক দিশা দেখাতে পারবে সারা বিশ্বকে।

Scroll to Top