ভাইরাল হতে গিয়ে নিজের অজান্তেই সন্তানকে ঠেলে দিচ্ছেন বিপদে! জানেন কোন ভুল করেছেন আপনি?

মানুষের জীবনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক হল সামাজিক মাধ্যম। আজ থেকে পাঁচ ছ বছর আগেও এই প্রযুক্তির এমন রমরমা ছিল না। কোথাও গিয়ে যেন একটা সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে, যুগের দাপটে আট থেকে আশি মজে রয়েছেন এই অন্তর্জালক ফাঁদে। শিশুর মুখে বুলি ফোটার আগে হাতে উঠে যাচ্ছে ফোন। বাবা মাও তাঁর শিশু এবং তার কার্য কলাপ সবার মাঝে তুলে ধরতে, হয়ে উঠছেন মরিয়া। শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে, তাঁর সকল প্রাথমিক পদক্ষেপ, উত্তরণ, প্রভৃতি মুহূর্তের সাক্ষী করছেন অন্যান্য নেট নাগরিকদের। জানেন, এর ফলে কী তীব্র বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে আপনাদের জীবনে?

‘শেয়ারেন্টিং’, এই মুহূর্তে এই শব্দবন্ধ বিশ্বের তাবড় তাবড় তাত্বিকদের আলোচনার মূলে। কী এই ‘শেয়ারেন্টিং’? আপনার বা আপনার শিশুর সঙ্গেই বা কীভাবে যুক্ত এই শব্দটি? এই প্রশ্নই নিশ্চয়ই আপনাদের মনেও জাগছে। আসলে ‘শেয়ারেন্টিং’ হল নিজেদের ব্যাক্তিগত যাপনের চিত্র, সামাজিক মাধ্যমে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। আলোচকরা একটি সমীক্ষা করে জানাচ্ছেন, নিজেদের পারিবারিক বা অন্যান্য মুহূর্ত আমরা আবেগের বশে ভাগ করে থাকি সামাজিক মাধ্যমে বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে। কিন্তু এর ফলে যে আমরা কিছু অসৎ মানুষের অসৎ উদ্দেশ্যের শিকার হই, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিশেষত শিশুর জীবন। শিশুর পদক্ষেপ আপনি আনন্দ সহকারে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলেও, এর মাধ্যমে অসাধু কাজ সম্পাদিত হয়ে উঠতে পারে আপনার অজান্তে। সাইবার বুলিং থেকে অপহরণের মত ভয়ংকর বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে আপনার সন্তানের জীবনে। আপনি বুঝতেও পারছেন না, আপনাদের জীবনের ওপর কত অজানা চোখ নজর রাখছে অসৎ উদ্দেশ্যে!

এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হতে শুরু করেছে বেশ কিছু দেশ। বাড়ি ফাঁকা করে, সামাজিক মাধ্যমে ভ্রমণরত কালে ছবি প্রকাশ্যে আনতে বেড়েছে ডাকাতির পরিমাণও। একাধিক ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ এই ‘শেয়ারেন্টিং’ এর ফলে। তাই বিশ্ব জুড়ে উঠেছে এখন সাবধান সাবধান রব!

পরিশেষে একটিই বার্তা, জেনে হোক বা না জেনে হোক, বিপদের মুখে ঠেলে দেবেন না আপন সন্তানকে। ব্যক্তিগত যাপন রাখুন নিজেদের মধ্যেই। আপনার আবেগের অসংযম যেন আপনার জীবনের ভয়ঙ্কর পরিণতি হয়ে না দাঁড়ায়!

Scroll to Top