‘স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে,
কে বাঁচিতে চায়?’ স্বাধীনতা! অর্থাৎ স্ব অধীনতা! ৭৬ টা বছর আগেও যা ছিল ভারতবাসীর জন্য স্বপ্ন বিলাসীতা। কারণ তার আগে প্রায় দু’শো বছর ধরে অবিরাম ব্রিটিশের যাঁতাকলে ভারতবাসীর পেষণ হতে থাকে। লক্ষ্য লক্ষ্য বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙ্গানো ইতিহাস হয়ে ওঠে ভারতের স্বাধীনতা আনয়নের পাথেয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট! স্বাধীন হয় ভারত। ব্রিটিশ শাসনের কালো অন্ধকার দূর হয়ে, কেবল মুক্তির উচ্ছ্বাসের আলোয় প্রতিভাত হয় ভারতবাসীর স্বাধীনতা। অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের রক্তক্ষয়ের সঙ্গে, ভারতের স্বাধীনতা আনয়নের অন্যতম অনুঘটক হয়ে ওঠে ব্রিটিশদের রাজকোষ শূন্যতা। ভারতের অশান্ত, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অবস্থাকে দমানোর মত ক্ষমতা ব্রিটিশ হারিয়েছিল। দুর্বল ব্রিটিশ সরকারের তখন ভারতের দায় নেওয়া হয়ে ওঠে বিড়ম্বনা। অগত্যা, ভারত ত্যাগ করা ছাড়া আর উপায় নেই। ১৯৪৭ সালের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ সরকার ঠিক করেন, তাঁদের রাজত্ব স্থায়ী করবার মত অর্থবল বা ক্ষমতা সব কিছুই তারা হারাতে বসেছেন। তাই, নিজের দেশে ফিরে যাওয়াই শ্রেয়। ঘোষিত হল খুব শ্রীঘ্রই, ১৯৪৮ সালের জুন মাসে হস্তান্তর করা হবে ভারতের শাসনভার। কিন্তু বাঁধে অন্য বিপদ। স্বাধীনতার দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে দানা বাঁধতে থাকে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা। ব্রিটিশ সরকার তাঁদের অক্ষমতার কথা মাথায় রেখে, সুযোগ বুঝে স্বাধীনতার দিন এগিয়ে আনেন। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে। দুটি আলাদা রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে যায় পাকিস্থান এবং ভারত। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট, হবু প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, ‘নিয়তির সঙ্গে অভিসার’ ভাষণটির মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
আজ স্বাধীনতার ৭৬ টা বছর পরিপূর্ন। মুক্তির আকাশ তো আমরা সকলেই খুঁজি। সকলেই সংগ্রাম করি নিজের মত ডানা মেলে দেওয়ার জন্য! কিন্তু এই স্বাধীনতার ভাবনাও তো আমাদের মনে আসত না, যদি না দেশ স্বাধীন হত! জিও বাংলা, তথা সমগ্র ভারতবাসীর পক্ষ থেকে সস্রদ্ধ প্রণাম জানাই সেই সকল মানুষগুলিকে, যাঁদের রক্তাশ্রয়ী ইতিহাসের ওপর আজ আমরা দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার স্বাদ নিচ্ছি। যাঁদের কান্নার হাহাকারকে চাপা দিয়ে আমরা বড়াই করছি স্বাধীনতার! প্রার্থনা করি, তাঁরা আবার ফিরে আসুক এক নিরপদ্রব, সহিষ্ণু, স্বাধীন ভারতের মাটিতে, ভারতমাতার কোলে।