যকৃৎকে সুস্থ রাখতে কী কী পালনীয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক

“উৎশৃংখল জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ক্ষতিকারক কীটনাশকের উপস্থিতি, অথবা খাদ্যে ভারী রাসায়নিক ধাতুর উপাদান, আমাদের যকৃতের পক্ষে বিপজ্জনক।” জিন্দাল নেচারকিওর ইনস্টিটিউটের (Jindal Naturecure Institute), ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডক্টর বিনোদা কুমারীর (Dr Vinoda Kumary) বয়ানে ফুটে উঠেছে, কী কী ভাবে যকৃৎ বিপদের মুখে পড়তে পারে! যকৃৎ হজম, অনাক্রম্যতা, পুষ্টি, এবং পরিপাকের বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বোঝাই যাচ্ছে, খাদ্য গ্রহণের পর, সেই গৃহীত খাদ্য দ্বারা দৈহিক ভাবে সচলতা বজায় রাখতে যকৃতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু আমরাই আমাদের দোষে, এই প্রধান অঙ্গকে বিপদগামী করে তুলি।

শরীরের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ হল যকৃৎ। আমাদের দেহে হজমের সবচেয়ে বেশি হজমের ভূমিকা পালন করে যকৃত। তাই, খাদ্যাভ্যাসে বিকৃতি ঘটালে, বিপদমুখী হয়ে ওঠে এই অঙ্গ! এবং তখন আমাদের শারীরিক জটিলতা দেখা যায়।

প্রত্যেক ১৯ এপ্রিল, বিশ্ব যকৃৎ দিবস (World Liver Day) হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। যকৃৎকে সুস্থতা প্রদান করবার জন্য, আমাদের জীবনপ্রণালীকে হতে হবে নিয়ন্ত্রিত। তার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু ঘরোয়া উপায়।

সুষম খাদ্য গ্রহণ- বাইরের অতিরিক্ত মসলা বা তেলজাতীয় খাদ্য শরীরের ক্ষতি করে। সকলের হজম ক্ষমতা অভিন্ন হয়না। তাই খাদ্য বিচারের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে, শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবেনা, এবং তা যকৃৎ-বান্ধবও হবে। এছাড়া অ্যালকোহল, চর্বি জাতীয় খাদ্য, উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাদ্য একেবারেই বর্জন করতে হবে। জল খাওয়া প্রচুর পরিমাণে বাড়াতে হবে।

সাপ্লিমেন্টারি খাদ্য গ্রহণ-
কিছু কিছু সাপ্লিমেন্ট খাদ্য যকৃতের প্রদাহ কমিয়ে, বিষ বা রাসায়নিকের আঘাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে, পিত্তের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বাটারমিল্ক খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।কারণ এতে প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একইভাবে, মশালাজাত খাদ্যের মধ্যে, হলুদও যকৃতের আঘাতকে মেরামত করে এবং গ্লুটাথিয়নের (Glutathione) উৎপাদন বাড়িয়ে যকৃতকে যেকোনো ঘাট প্রতিঘাত থেকে রক্ষা করে। এটি পিত্তের উত্পাদনকেও উদ্দীপিত করে, যা আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রে সঞ্চিত অতিরিক্ত ফ্যাটকে পাচন করে।

শরীর চর্চা- যে কোনো রোগ প্রতিরোধে শারীরিক পরিশ্রম বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যায়াম বা যোগাভ্যাস শরীরের মধ্যকার অতিরিক্ত মেদকে ঝরিয়ে দেয়, এবং হজম প্রক্রিয়াকেও সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত করে। এর ফলে শরীরে সতেজতা আসে।

সুতরাং খাদ্যের প্রতি সৎ থেকে, নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করলে, আপনার যকৃৎও আপনার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বাধ্য হবে।

Scroll to Top