মেধাশ্রী বৃত্তি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রোগ্রাম, যার লক্ষ্য অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পটভূমি থেকে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে সমর্থন করা। বৃত্তিটির নামকরণ করা হয়েছে মেধা বন্দোপাধ্যায়ের নামে, যিনি একজন বিখ্যাত ভারতীয় শিক্ষাবিদ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্য ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১২ সালে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এই বৃত্তি কার্যক্রম শুরু করেছিল। মেধাশ্রী স্কলারশিপ বিজ্ঞান, মানবিক, প্রকৌশল এবং চিকিৎসার মতো বিভিন্ন ধারায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি, হোস্টেল ফি এবং অন্যান্য একাডেমিক খরচের খরচ কভার করে।
মেধাশ্রী স্কলারশিপের জন্য যোগ্য হওয়ার জন্য, শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে হবে যেগুলি হলো:
প্রথমত, তাদের অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে এবং তাদের পারিবারিক আয় বার্ষিক ২.৫ লাখ টাকার কম হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, তাদের শেষ যোগ্যতা পরীক্ষায় কমপক্ষে ৭৫% নম্বর পেতে হবে।
তৃতীয়ত, তারা অবশ্যই চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে এমন হতে হবে।
স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছে। এটি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বিভাগের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার বিষয়ে চিন্তা না করে তাদের একাডেমিক লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করতে সক্ষম করেছে। মেধাশ্রী স্কলারশিপ মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার প্রচারে সাহায্য করেছে, কারণ এই প্রোগ্রামটি মহিলা শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে।
আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি, মেধাশ্রী বৃত্তি সমাজে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও সাহায্য করেছে। এটি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষের জন্য প্রচেষ্টা করতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তাদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করেছে। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এবং সুবিধাবঞ্চিত অংশের মধ্যে ব্যবধান কমাতেও বৃত্তি কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
মেধাশ্রী বৃত্তি হল আর্থিক পটভূমি নির্বিশেষে সকলকে শিক্ষার সমান সুযোগ প্রদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক গৃহীত একটি মহৎ উদ্যোগ। এটি অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার ক্ষমতা দিয়েছে এবং তাদের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি অন্যান্য রাজ্যগুলির অনুসরণ করার জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে অবদান রেখেছে।