ChatGPT News: ChatGPT-র কাছে কাজ হারালেন কলকাতার শরণ্যা। রোজগার-শূন্য পরিবার।

ChatGPT আসার ফলে যে অনেক মানুষের কাজ হারাতে চলেছে সেটির আশঙ্কা ছিলই! এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। থাবা বসলো খোদ কলকাতার বুকে। থাবা বসলো একজন 22 বছরের যুবতীর কাজে যার নাম শরণ্যা।

কলকাতার মেয়ে শরণ্যা পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ক্রিয়েটিভ এজেন্সিতে ঘোস্টরাইটিং এবং কপি রাইটিং করতেন। ChatGPT আসার আগে পর্যন্তও নিয়মিত কাজ আসত তাঁর কাছে। ঘোস্টরাইটারের কাজ করে ভালই চলছিল তাঁর। কিন্তু ChatGPT-র আগমন হতেই শারণ্যার রোজগার এক ধাক্কায় 90% নেমে গিয়েছে। এখন রাইটিং অ্যাসাইনমেন্ট আসছে খুবই কম। তার কারণে রোজগারও কমেছে শরণ্যার। কী কারণে কাজ এত কমেছে, তার কোনও ব্যাখ্যা এখনও পর্যন্ত কোম্পানির তরফে দেওয়া হয়নি।

প্রত্যেক সপ্তাহে অগুনতি SEO-অপটিমাইজ়ড আর্টিকেল লিখতেন শরণ্যা, যে কাজে তিনি যথেষ্ট পারদর্শী। কপি লিখে মাসে 20,000 টাকার বেশিই রোজগার করতেন তিনি। পরিবারের অবস্থাও যে খুব ভাল তা নয়। তাঁর মা বন্দনা পেশায় একজন শাড়ি বিক্রেতা। মোবাইল থেকে কপি লিখেই যতটা সম্ভব মা’কে সাহায্য করতেন শরণ্যা। কিন্তু এখন সেই রাস্তাটাও প্রায় বন্ধ।

হঠাৎ এই পরিবর্তনের প্রভাব ছিল যথেষ্টই বিধ্বংসী, শুধু শরণ্যার জন্য নয়। এর প্রভাব পড়েছে তাঁর পরিবারের উপরেও। তাঁর আয় একটা সময় গোটা পরিবারকে টিকিয়ে রেখেছিল। তা হুট করে 90 শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় যা হওয়ার ঠিক তাই হয়েছিল শরণ্যা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ থেকে পড়াশোনা করছেন শরণ্যা। সেই সঙ্গেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন কপিরাইটিংয়ের চাকরি। কিন্তু সেখানেও চাকরির বাজারের সম্ভাব্য বেকারত্বের ভয় তাঁকে ঘিরে ধরেছিল। ভবিষ্যত সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে যথেষ্ট প্রভাব ফেলছিল। প্রচণ্ড উদ্বেগে দিন গুজরান হতে-হতে অতঃপর প্যানিক অ্যাটাকের সম্মুখীন হন শরণ্যা। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেছেন, “পড়াশোনা করতে-করতেই আমি আমার জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু কাজের পরিমাণ হঠাৎই কমে যাওয়ায় আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। গত কয়েক মাস আমার জন্য সময়টা মোটেই ভাল ছিল না।”

এখানেই কোম্পানিগুলি একটু ভাবতে বলছেন শরণ্যা। বলছেন, “AI যখন দায়িত্ব নেবে, তখন বহু মানুষ তাঁদের চাকরি হারাবে। কিন্তু তারপরই তাঁর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শরণ্যার দাবি, তাঁর মতো কপিরাইটাররা একটা কনটেন্টে যে মূল্য যোগ করে, তা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স পারে না।”

খোদ কলকাতার বুকে এমন ঘটনায় সকলেই স্তম্ভিত। তবে শরন্যার কথায় ভবিষ্যতে ভাল ফলাফল পেতে মানুষ এবং AI একসঙ্গে কাজ করতে পারে। তখন এই সব সমস্যার সমাধান হয়ে আলোর রেখা ফুটবে। এমন একটা দুনিয়ার স্বপ্ন দেখছি সকলেই আমরা।

Scroll to Top