আপনি কি খুব স্ট্রেসড? এই কটি নিয়ম মেনে চলুন, মিলবে ফলাফল

রোজ রোজ অফিস, ব্যস্ত সিজিউল, বসের দেমাক, কাজের চাপ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা, প্রেম বিচ্ছেদ বা আরও নানা রকম যাবতীয় সম্পর্ক ইত্যাদি প্রভৃতি বিভিন্ন কারণে আমরা ভালো থাকার সকল রসদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। এর ফলে দেখা দেয় স্ট্রেস! যার কারণে একটা সময়ে হীনমন্যতার অতলে তলিয়ে যেতেও পারি আমরা। মেজাজ হয় রুক্ষ, ভুল হয় কাজে। প্রভাবিত হয় কাছের সম্পর্কগুলো। কিছুতেই বাগে আনা যায় না এই কঠিন পরিস্থিতিকে। মানুষ হিসেবে যেন পিছিয়ে যাই নিজের কাছেই। কিন্তু জানেন কি, খুব সামান্য কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললেই আপনি ‘স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট’ করতে সক্ষম হবেন? কীভাবে? চলুন, আজকের বিশেষ পর্বে সেই সম্পর্কেই জেনে নেওয়া যাক তবে।

স্ট্রেস হয় বিভিন্ন কারণে। ব্যাক্তিগত কারণে, কর্মক্ষেত্র সম্পর্কিত কারণে, ভবিষ্যত, ইত্যাদি বিভিন্ন অনিশ্চয়তা নিয়ে আমাদের মস্তিষ্কে হরমোন নিঃসরণ হওয়ার সময় বিভিন্ন অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়। যার ফলে আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে, খুব অল্প কারণেই আমরা রেগে যাই, এমনকী কখনও কখনও রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠি। যা লোকসমাজে খুবই বেঠিক। আবার অত্যধিক চিন্তা করার ফলে আমাদের পালস রেট বেড়ে ‘Anxiety Attack’ দেখা দেয়। বেশি বাড়াবাড়ি হলে স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এই সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত হতে পারে আপনার প্রচেষ্টায়।
এর জন্য কিছু নিয়ম আমাদের মেনে চলতেই হবে।

দীর্ঘ শ্বাস

আপনি স্ট্রেসে থাকলে বা কোনও বিষয় নিয়ে চিন্তায় থাকলে, আগে নিজেকে সময় দিন। লম্বা লম্বা শ্বাস নিন। এর ফলে আপনার প্রেসার, পালস রেট এর গতিতে যে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় স্ট্রেস নেওয়ার ফলে, তা দূরীকরণ হবে।

ধ্যান

ধ্যান স্ট্রেস কমানোর জন্য অন্যতম একটি কার্যকরী উপায়। একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নির্বাচন করে নিন। সেখানে আধ ঘন্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাতে সময় বাড় করে, এক মনে চোখ বন্ধ করে ধ্যান করুন। হয় নাকের ডগার দিকে চোখ বন্ধ করে ফোকাস রাখবেন, অথবা আপনার আরাধ্য ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করবেন। আপনার মন যাঁর কারণে বা যে কারণে শান্ত হয়, সেই দিকে মনোসংযোগ করবেন ধ্যানের মাধ্যমে।

পরিস্থিতির হাতে ছেড়ে দেওয়া

আমাদের চিন্তিত হওয়ার এমন অনেক কারণ থাকে যা সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া গতি নেই। প্রাকৃতিক নিয়মে এমন ঘটনা ঘটে। তাই প্রচুর দার্শনিক বই পড়ুন, বা ভালো ভিডিও দেখুন যা আপনাকে ‘মোটিভেট’ করবে। এবং সুচিন্তা করতে এবং পরিস্থিতিকে গ্রহণ করতে আপনি বাধ্য হবেন।

ডার্ক চকোলেট

জানেন কি, ডার্ক চকোলেট আমাদের স্ট্রেস দুর করার ক্ষমতা রাখে? এর মধ্যে এমন একটি উপকারী উপাদান থাকে যা খেলে ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসরণ হয় আমাদের শরীরে। এবং এর ফলে আমরা চিন্তামুক্ত থাকতে পারি।

ভাগ করে নেওয়া

যাঁকে বিশ্বাস করেন, এমন কোনও কাছের ব্যাক্তিকে সব উজাড় করে বলুন। এতে মন হালকা হবে। উপরন্তু তাঁর থেকেও সাহায্য পেতে পারেন।

ঘুম

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম আপনার ক্লান্তি দূর করতে পারে এবং যার ফলে আপনি সতেজ এবং তরতাজা থাকতে পারবেন। দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম ভীষণ জরুরি।

জল পান

যেকোনও শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলী সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমাদের চাই জল। দিনে তিন থেকে চার লিটার জল একজন সুস্থ মানুষের পান করা উচিত। এর ফলে হরমোন ক্ষরণ ঠিকঠাক হয়, যার ফলে শারীরিক কার্যাবলীর মধ্যে কোনও অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতার সৃষ্টি হয় না। আমাদের শরীর সুস্থ থাকলে, মনও সুস্থ থাকবে।

[ বি দ্রঃ – এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত সমস্যার সমাধানগুলিই একান্ত নয়। আপনি স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে, এবং জটিলতা দেখা দিকে অতি অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।]

Scroll to Top